গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, চলমান সংস্কার, খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া ও দেশের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ড. ইউনূসের সরকার আসলে শেখ হাসিনার পরামর্শে দেশ পরিচালনা করছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মুজিববাদ ও ফ্যাসিবাদের অবসান হবে না।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ফ্যামিলি জোন রেস্টুরেন্টে আয়োজিত ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং সফল গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, চুনোপুটি নয়—খুনি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, কামাল ও শামীম ওসমানদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে। এ নিয়ে কোনো প্রকার টালবাহানা জাতি সহ্য করবে না। প্রয়োজনে আরও ১০টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে, আর অর্থের অভাব হলে জনগণই অর্থ জোগাবে।
এনসিপিকে সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন, এই দল সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। টিআইবি প্রধানও তাদের ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এনসিপি সমর্থিত দুই উপদেষ্টা পদে থেকেই সরকার পরিচালিত হচ্ছে, অথচ তারা সমালোচনায় লিপ্ত। এর মধ্যেই তাদের ভুল ভাঙতে শুরু করেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, যারা হাসিনার মতো স্বৈরশাসককে ক্ষমতা থেকে সরিয়েছেন, তারাই এখন নানা অনিয়মে জড়াচ্ছেন এবং সমাজে হেয় হচ্ছেন। একইসঙ্গে ছাত্রদের কলঙ্কিত করার প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
প্রত্যেক উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ডিসি নিয়োগ থেকে শুরু করে সবখানেই অনিয়ম চলছে। বিএনপি-জামায়াতপন্থী বলে চিহ্নিত অনেক আমলা এখনও পদোন্নতি ও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জুলাই সনদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘের তথ্যমতে নিহতের সংখ্যা ১,৪০০ হলেও সনদে তা কমিয়ে ১,০০০ করা হয়েছে—এটি কেন ও কীভাবে হলো, তা জাতিকে জানতে হবে।
গণঅভ্যুত্থানের শক্তিকে একসঙ্গে মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, মাঠ ছেড়ে দিলে আওয়ামী লীগ দখল করে অরাজকতা সৃষ্টি করবে। তাই ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে। তিনি ১৪, ১৯ ও ২৪ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী ডিসি, এসপি ও ইউএনওদের বিচারও দাবি করেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঝিনাইদহ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন। বক্তব্য দেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, যুব অধিকারের সভাপতি রাকিবুল হাসান রকিব, যুবনেতা মিশন আলী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লা আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রায়হান হোসেন রিহান, মাহাফুজ রহমান, হালিম পারভেজ ও নাহিদ হাসনান প্রমুখ