Tuesday, August 12, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক দেশ

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক দেশ


গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলার পর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন গতি পেয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা এই হত্যাযজ্ঞ বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ফিরিয়ে এনেছে ফিলিস্তিনিদের বহুদিনের স্বপ্ন—একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের অধিকার। এর ফলে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক চাপ ও সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণা ছিল, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মর্যাদা পাবে না। কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।

১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর, প্রথম ইন্তিফাদা চলাকালীন, ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত আলজিয়ার্সে নির্বাসিত ফিলিস্তিনি জাতীয় কাউন্সিলের বৈঠকে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোষণা দেন। লক্ষ্য ছিল দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান, যেখানে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন পাশাপাশি থাকবে। কয়েক মিনিটের মধ্যে আলজেরিয়া প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এক সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ আরব দেশ, ভারত, তুরস্ক, আফ্রিকার বহু দেশ এবং কিছু ইউরোপীয় রাষ্ট্রও স্বীকৃতি জানায়।

২০১০ সালের শেষ ভাগ এবং ২০১১ সালের শুরুতে আবারও স্বীকৃতির ধারা শুরু হয়, যখন মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়ে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলিসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। পশ্চিম তীরে বসতি নির্মাণে ইসরাইলের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরও সমর্থন জোরদার হয়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইলের গাজা অভিযান আন্তর্জাতিক সমর্থন আরও বাড়িয়ে তোলে। ২০২৪ সালে জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, বার্বাডোস, বাহামা এবং আর্মেনিয়া কূটনৈতিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়। নরওয়ে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়া—এই চারটি ইউরোপীয় দেশও একই পথে হাঁটে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য সুইডেন ২০১৪ সালে স্বীকৃতি দেয়ার পর এটি ছিল প্রায় এক দশক পরে নতুন পদক্ষেপ। পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া ১৯৮৮ সালেই স্বীকৃতি দিয়েছিল, তবে হাঙ্গেরি ও চেক প্রজাতন্ত্র এখনো দেয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ঘোষণা করেছেন, জাতিসংঘের পরবর্তী অধিবেশনে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্র মর্যাদা স্বীকৃতির পক্ষে ভোট দেবেন। ফ্রান্স সেপ্টেম্বরে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে, আর ব্রিটেন বলেছে, ইসরাইল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলে তারা একই সিদ্ধান্ত নেবে। কানাডাও সেপ্টেম্বরে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যা তাদের নীতিতে বড় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মাল্টা, ফিনল্যান্ড ও পর্তুগালও স্বীকৃতি দেওয়ার সম্ভাবনা বিবেচনা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক ঐক্য ফিলিস্তিনের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments