বরিশালে ছাত্র-জনতা টানা ষষ্ঠ দিনে বেলা ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালসহ দেশের সকল সরকারি হাসপাতালের সিন্ডিকেট ভাঙা, দুর্নীতি বন্ধ এবং স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারের দাবিতে এই কর্মসূচি চালানো হয়।
অবরোধের কারণে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। হাজার হাজার যাত্রী দীর্ঘক্ষণ সড়কে আটকে থেকে ভোগান্তিতে পড়েন।
বিকেলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা শেবাচিম হাসপাতালে এসে দাবি আদায়ে স্পষ্ট আশ্বাস না দিলে অবরোধ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন আন্দোলন নেতা মহিউদ্দিন রনি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে বরিশালসহ ৬ জেলার অবরোধের মাধ্যমে পুরো দক্ষিণাঞ্চল অচল করে দেওয়া হবে।
মহিউদ্দিন রনি বলেন, আন্দোলন এখন শুধু বরিশালের সীমাবদ্ধ নেই, এটি দেশের দাবিতে পরিণত হয়েছে। অথচ বিষয়টি এখনও মন্ত্রণালয়ে পৌঁছায়নি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, দুই সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী হাসপাতালের সামনে আমরণ অনশনে বসে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। এছাড়া, তারা মঙ্গলবার সদর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে বিকল্প সড়কেও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়, অনেক যাত্রী দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
অবরোধ চলাকালে জরুরি গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের জন্য ইমার্জেন্সি লেন খোলা রাখা হয়। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল।
শেবাচিমের দুই অনশনকারী শিক্ষার্থী তাহমিদ ইসলাম দাইয়ান ও সাফিন মাহমুদ শ্বাসকষ্ট ও হাত-পা অবস হওয়ায় স্যালাইন ও অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। তারা হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসা নিতে রাজি হয়নি।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মশিউল মুনীর জানান, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বরিশালের বিষয়ে ইতিবাচক অবস্থান নিয়েছেন। শিগগিরই দেশে ৩ হাজার চিকিৎসক ও ৩২০০ নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। এছাড়া হাসপাতালের জন্য এমআরআই মেশিন, ক্যাথ ল্যাব ও সি-আম মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে। তিনি বরিশালবাসীর কাছে তিন মাস সময় চেয়েছেন।
গত ১৬ দিন ধরে চলমান এই আন্দোলনের মধ্যেই আজকের মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হলো।