Wednesday, August 13, 2025
spot_imgspot_img
Homeরাজনীতিনিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা জুলিয়াস সিজার ডাকসুর ভিপি পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করায় তীব্র...

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা জুলিয়াস সিজার ডাকসুর ভিপি পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করায় তীব্র বিতর্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে চিহ্নিত ছাত্রলীগ নেতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি ডাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।

জানা গেছে, জুলিয়াস ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে সেই নির্বাচনে সশস্ত্র হামলা, ভোট বাধা প্রদান এবং শিক্ষার্থী নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক প্রার্থী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের বাহিনী ছাড়া অন্য প্রার্থীদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছিল। এস.এম. হলে কৃত্রিম লাইন তৈরি করে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার ঘটনায়ও জড়িত ছিলেন তিনি। এছাড়া স্বতন্ত্র হল সংসদ প্রার্থী ফরিদকে মারধর করে কানে আঘাত করার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর আমিন শুভ বলেন, “ফরিদ ভাইকে হলে তোলার চেষ্টা করার সময় আমাদের ওপরও জুলিয়াস বাহিনী হামলা চালায়। ওই হামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরুল হক নূর, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং ছাত্রদল নেতা মাহমুদসহ অনেকে আহত হন।”

অপরদিকে, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের পর এস.এম. হলে হামলার প্রতিবাদে মিছিল করার সময়ও তার নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাবেক জিএস প্রার্থী আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক বলেন, “আমি ২০১৯ সালের ডাকসু জিএস পদে প্রার্থী ছিলাম। সেই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদকে মারধরের নেতৃত্ব দিয়েছিল জুলিয়াস। এছাড়াও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য জুলিয়াস আমাকে কৃত্রিম লাইন তৈরি করে বাধা দিয়েছিল।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হীল বাকী বলেন, “নিষিদ্ধ এই ছাত্রলীগ নেতা এখনও কীভাবে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করছেন, তা প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন।”

বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেন, “জুলিয়াসের বিরুদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে মনোনয়ন দেয়ায় শিক্ষার্থীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। বিগত নির্বাচনে সংঘটিত হামলার ঘটনাগুলো সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনী ভোটার তালিকায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম অন্তর্ভুক্ত থাকা বন্ধ করতে হবে। না হলে ক্যাম্পাস থেকে ফ্যাসিবাদ মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না, যার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জুলিয়াস সিজার তালুকদার বলেন, “আমি ছাত্রলীগ নেতা গোলাম রব্বানীর অনুসারী ছিলাম, তবে ছাত্রলীগে আমার কোনো পদ ছিল না। আমার নামে আনা অভিযোগের কোন লিখিত প্রমাণ নেই। বরং আমি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধেও কথা বলেছি এবং কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছি।”

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন। তাদের একজন জামালুদ্দীন মুহাম্মাদ খালিদ বলেন, “আমরা প্রধান রিটার্নিং অফিসারকে আগামীকাল দুপুর ১২ টা পর্যন্ত জুলিয়াস সিজারের ভোটাধিকার ও মনোনয়ন বাতিল এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছি।”

নির্বাচন কমিশনের প্রধান ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments