ভারী বর্ষণ এবং ফারাক্কার প্রভাবে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে কুষ্টিয়ায় পদ্মা ও গড়াই নদীর পানি প্রতিদিন বাড়ছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) পদ্মার পানি পরিমাপ করা হয় ১২.৮৯ সেন্টিমিটার এবং গড়াই নদীর পানি ১১.২৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার মাত্র এক সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন পানি গড়ে ১০-১৫ সেন্টিমিটার বাড়ছে।
এতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার অন্তত ৪০-৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। চরের ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকায়ও পানি উঠে গেছে। চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বহু রাস্তা এবং স্কুল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের ফসলি মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গোখাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে, এবং গবাদিপশু নিয়েও ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান জানিয়েছেন, “সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পানি আরও বাড়তে পারে, তাই আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
চরের বাসিন্দারা জানান, নিম্নভূমি প্লাবিত হওয়ায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। চিলমারী ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি, এবং ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষও পানিবন্দি।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, চরের দুই ইউনিয়নের ১৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকায় শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। দৌলতপুর ইউএনও আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানিয়েছেন, “বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং মানুষকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।”
পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুজ্জামান জাহিদ জানিয়েছেন, “পদ্মা ও গড়াই নদীতে প্রতিদিন পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে কত দিন এ অবস্থা চলবে তা বলা যাচ্ছে না।”