সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কর্তৃক পরিচালিত এক জরিপে উঠে এসেছে, দেশের ৭১ শতাংশ মানুষ উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে আসন বণ্টনের পক্ষে। একই জরিপে দেখা গেছে, ৬৯ শতাংশ মানুষ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ চায়। এছাড়া ৮৭ শতাংশ মানুষ একমত, যে কোনো ব্যক্তি একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, দলীয় প্রধান ও সংসদনেতা হতে পারবেন না।
জরিপ অনুযায়ী, ৮৯ শতাংশ মানুষ চায় একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবে না। রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি পরিবর্তনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৯০ শতাংশ। ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নিম্নকক্ষে নারী আসন সংরক্ষণের পক্ষে ৬৩ শতাংশ এবং উচ্চকক্ষে নারীদের জন্য ৩০টি আসন সংরক্ষণের পক্ষে ৬৯ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।
বিরোধী দল থেকে নিম্নকক্ষে ডেপুটি স্পিকার নিয়োগের পক্ষে ৮৬ শতাংশ ও উচ্চকক্ষে ৮২ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন। দুদক, মানবাধিকার কমিশন, তথ্য কমিশন ও প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কমিশনকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ৯০ শতাংশ। জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের পক্ষে ৮০ শতাংশ, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ ও শর্তহীন করার পক্ষে যথাক্রমে ৮৮ ও ৮৪ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।
নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারে এমন কার্যক্রম গ্রহণে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি বিধান করার পক্ষে ৮৭ শতাংশ, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পক্ষে ৮৬ শতাংশ এবং নির্বাচনি ব্যয় ও অসত্য তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে ৮৮ শতাংশ সমর্থন জানিয়েছে। এছাড়া ৯২ শতাংশ মানুষ মনে করেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দলের সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকা উচিত নয়।
জরিপে ১২০ দিনের জন্য নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন ৮৩ শতাংশ। সংবিধান সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের পক্ষে ৮৫ শতাংশ এবং পাঁচ বছর অন্তর দলের নিবন্ধন নবায়নের পক্ষে ৭৬ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন। ব্যাংকিং চ্যানেলে দলের আর্থিক লেনদেন প্রকাশের পক্ষে ৯১ শতাংশ এবং প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে দলের সদস্যদের মতামত নেওয়ার পক্ষে ৮৩ শতাংশ সমর্থন দিয়েছেন।
পুলিশ কমিশন স্থাপনের পক্ষে ৯০ শতাংশ, হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের পক্ষে ৮৮ শতাংশ, স্থানীয় সরকারের স্বায়ত্তশাসন ও স্থানীয় আদালত স্থাপনের পক্ষে যথাক্রমে ৮৪ ও ৮১ শতাংশ, দক্ষ পেশাজীবী নিয়োগের পক্ষে ৮৫ শতাংশ এবং স্থানীয় সরকার কমিশন গঠনের পক্ষে ৯০ শতাংশ মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন।
সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার জানান, এই জরিপ প্রমাণ করছে, জনগণ সংস্কারের পক্ষে এবং তারা দেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চায়। বিদ্যমান পদ্ধতি, প্রক্রিয়া ও প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে সহায়তা করেছে। তাই এসব পরিবর্তন করা প্রয়োজন।