আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিভিন্ন শর্ত দিয়ে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা ও প্রস্তুতি নিতে চাইলেও, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সন্দেহ ও প্রশ্নগুলো কমেনি। কারণ, জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, সংবিধান সংস্কার এবং নির্বাচনের পদ্ধতি সংক্রান্ত শর্তে জামায়াত ও এনসিপি বিএনপির বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াত ও এনসিপির এই অবস্থান দলের মধ্যে বিভক্তি বৃদ্ধি ও নির্বাচনের অস্থিরতা বাড়ানোর সুযোগ তৈরি করতে পারে। নির্বাচন সময় নিয়ে বিএনপি ও অন্য দলগুলোর মতপার্থক্য ছিল শুরু থেকেই। বিএনপি দ্রুত নির্বাচন দাবি করলেও, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করার পরিকল্পনা নিয়ে ছিলেন। পরে লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। তবে লন্ডন বৈঠক এবং ঘোষিত যৌথ বিবৃতির কারণে জামায়াত ও এনসিপি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।
জামায়াত ও এনসিপি এখন নির্বাচনের আগে জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি এবং নির্বাচনী পদ্ধতিতে পরিবর্তনের দাবি তুলেছে। এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সংবিধান, সংস্কার ও বিচার পেছনে ফেলে এখন শুধু নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে জামায়াতের নেতারা মনে করেন, তাদের দাবির প্রতি নজর না দিলে একটি ‘ডিজাইনড’ বা সাজানো নির্বাচন হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, যদি জামায়াত ও এনসিপি আন্দোলন বা নির্বাচন বর্জনের মতো অবস্থান নেন, তবে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং তা বিএনপির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে বিএনপির নেতা ও স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এটিকে মাঠের কণ্ঠ বা বক্তব্য বলে উল্লেখ করেছেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন, সব দল ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে অংশ নেবে।
রাজনীতিকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে কোনো দল যদি দাবিদফা নিয়ে কর্মসূচি চালায়, তবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতে পারে। জামায়াত ও এনসিপি বলছে, ফেব্রুয়ারিতেই তারা অংশ নেবে, কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের শর্তে তারা সরবেন না। বিএনপি তাদের অবস্থানেও কোনো ছাড় দিচ্ছে না। ফলে, নির্বাচনকে ঘিরে সন্দেহ, সংশয় ও রাজনৈতিক চাপ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।