বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দলের সাবেক নায়েবে আমির, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর অবদান স্মরণ করেন এবং তার মৃত্যুর পেছনে চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগ তোলেন।
তিনি জানান, ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট রাতে পিজি হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসার ঘাটতির কারণে আল্লামা সাঈদী ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। কাশিমপুর কারাগার থেকে অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকায় এনে সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও, চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ ওঠে। এ সময় তার স্ত্রী ও সন্তানদের সাথেও সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
ডা. শফিকুর রহমান জানান, মৃত্যুর পর ঢাকায় জানাজা আয়োজনের সুযোগ না দিয়ে, লক্ষাধিক মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি চালায়, যাতে বহু মানুষ আহত হন। পরে মরদেহ তার নিজ গ্রাম পিরোজপুরে নিয়ে গিয়ে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। সেখানে লাখো তৌহিদী জনতা অশ্রুসিক্ত নয়নে তার জন্য দোয়া করেন।
তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদী তার জীবদ্দশায় অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে দেশে-বিদেশে কুরআনের তাফসির করেছেন, যা আজও মানুষকে ইসলামের প্রতি অনুপ্রাণিত করছে। সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার রচিত ইসলামী সাহিত্য, তাফসির ও সিরাতের গ্রন্থ বহু প্রজন্মকে দিকনির্দেশনা দেবে। তার প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও ইসলামের দাঈ ও মুফাসসির তৈরি হচ্ছে, যারা তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাবে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের এক নির্ভীক কণ্ঠস্বর, যিনি সারাজীবন আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও মানবতার কল্যাণে কাজ করেছেন। তার কর্মপন্থা আমাদের জন্য দৃষ্টান্ত। আমরা ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে একটি মানবিক ও কল্যাণমুখী ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের পথে অবিচল থাকব।”
শেষে তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেন যেন আল্লামা সাঈদীকে জান্নাতুল ফেরদাউসে স্থান দেন এবং তার দাওয়াতি কর্মপন্থা অনুসরণের তাওফিক দান করেন। তিনি আরও জানান, আল্লামা সাঈদীর প্রত্যাশা ছিল শাহাদাতের মৃত্যু, এবং তিনি প্রার্থনা করেন যেন তার মৃত্যুকে শহিদি মৃত্যু হিসেবে কবুল করা হয়। একই সঙ্গে তিনি জামায়াত, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং দেশবাসীকে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।