২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজার জন্য পিরোজপুরে লাখো মানুষ সমবেত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর নানা বাধা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ সাঈদীকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে পৌঁছেছিল।
ছাত্রলীগসহ অন্যান্য রাজনৈতিক গ্রুপ সাঈদীর দাফন ও জানাজার পথে বাধা সৃষ্টি করলেও, শ্রমিকলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার মধ্য দিয়ে শতাধিক ব্যক্তি আহত হলেও জনগণ তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। উল্লেখযোগ্য, সাঈদীর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁকে খুলনার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় দাফন করানোর প্রস্তাবে আওয়ামী লীগ বাধা দিয়েছিল। মৃত্যুর পরও বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতারা মিছিল করেন।
সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০১১ সালে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুটপাটসহ ২০টির বেশি অপরাধের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ২০টি অভিযোগের মধ্যে ৮টিতে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ২টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে কিছু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে নিন্দা জানায়। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বোচ্চ আদালতের আপিল রায়ে মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তিত হয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়।
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। প্রথমে তাঁকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। ১৪ আগস্ট রাতে ৮৩ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরের দিন ১৫ আগস্ট পিরোজপুরের সাঈদী ফাউন্ডেশনে জানাজার পরে সেখানে তাঁকে দাফন করা হয়।
সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদী অভিযোগ করেন, সুস্থ অবস্থায় তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে, সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুকরঞ্জন বালি লাখো জনতার সামনে জানান, যেই অপরাধে সাঈদীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তিনি সেগুলোর সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত ছিলেন না।