রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পদ্মাপাড়ের রাখালগাছি এলাকায় বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বর্ষার সময় কেউ মারা গেলে কবর না থাকার কারণে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না, কারণ নিম্নস্থানের কবর পানিতে তলিয়ে যায়।
এ অঞ্চলের মানুষ নৌকা বা ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের ওপরই চলাচলের ভরসা রাখে। রাস্তাগুলো বেহাল, স্বাস্থ্যসেবা নেই, শিক্ষার ব্যবস্থা অপ্রতুল। অন্তঃসত্ত্বা ও বয়স্করা বিশেষভাবে সমস্যায় পড়েন, কারণ হাসপাতালে পৌঁছতে ২ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। স্বাস্থ্যকর টয়লেটের অভাবে ঝুলন্ত টয়লেট ব্যবহার চলছে। পাশাপাশি বাল্যবিবাহের প্রবণতাও রয়েছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বর্ষার পানি এলেই লাশ ভাসাতে হয়। সাইমদ্দিন প্রামানিক জানান, কবরস্থানের জায়গা নিচু হওয়ায় বর্ষার সময় পানিতে তলিয়ে যায়, তাই লাশ ভাসানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ঝর্ণা বেগম বলেন, “আমাদের নৌকা ছাড়া চলার উপায় নেই। সরকারের প্রতি মাসে একজন ডাক্তার আসলেই কিছুটা উপকার হয়।” বাবু মাতুব্বর বলেন, ভাঙা রাস্তায় চলাচল ও কৃষিকাজে বড় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি স্বীকার করেছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কবির হোসেন জানান, স্কুল স্থাপনের ক্ষেত্রে নীতিমালার সীমাবদ্ধতা আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. শরিফুল ইসলাম বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলে স্বাস্থ্যসেবা সহজ হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়মিত সেবা দিতে কিছু বাধা থাকলেও কবরস্থানের বিষয় নজরে রাখা হয়েছে।