ইয়েমেনের রাজধানী সানার নিকটে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইসরায়েলি নৌবাহিনী হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে রবিবার এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। হামলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটে, তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, হামলায় কেন্দ্রের জেনারেটর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, জরুরি কর্মীরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে সক্ষম হয়েছেন। সানার বাসিন্দারা অন্তত দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, হুথিরা ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ব্যবহার করছিল। তবে বেসামরিক স্থাপনায় হামলার যৌক্তিকতা প্রমাণ করার কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারেনি, যা এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানায়, হামলাটি হুথিদের ধারাবাহিক আক্রমণের জবাবে পরিচালিত হয়েছে। হুথিরা ২০২৩ সাল থেকে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায় রকেট ও ড্রোন নিক্ষেপ করছে। এর জবাবে ইসরায়েল ইয়েমেনের বিভিন্ন অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হোদেইদা বন্দরও রয়েছে।
ইসরায়েলের দিকে নিক্ষিপ্ত বেশিরভাগ হুথি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হলেও এসব পাল্টা আক্রমণ গাজায় যুদ্ধকে আঞ্চলিকভাবে বিস্তৃত করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও হুথি কার্যক্রমের জবাবে ইয়েমেনে হামলা চালিয়েছে।
এ হামলা বৈশ্বিক বাণিজ্যকেও প্রভাবিত করেছে। গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র হুথির সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায়, যা অনুযায়ী তারা বিমান হামলা বন্ধ করে এবং হুথিরা যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা স্থগিত করে। তবে হুথিরা জানিয়েছে, এই চুক্তি তাদের ইসরায়েলবিরোধী কার্যক্রমে প্রযোজ্য নয়।
যুদ্ধবিরতির আগে মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনে শত শত বিমান হামলা চালায়, যার ফলে আড়াই শতাধিক মানুষ নিহত হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, চুক্তিটি ‘বোমাবর্ষণ বন্ধ করবে’। অন্যদিকে, ইসরায়েলকে হতবাক করায় প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, প্রয়োজনে দেশ একাই নিজেদের রক্ষা করবে।