দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করে ক্যাটাগরি-৫ এ পরিণত হয়েছে হ্যারিকেন অ্যারিন। ঝড়টির স্থায়ী বাতাসের গতি এখন ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ মাইল বা ২৬০ কিলোমিটার, এবং আরও শক্তি অর্জনের শঙ্কা রয়েছে। ভয়াবহ এই ঝড় যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলজুড়ে প্রাণঘাতী ঢেউ ও বিপজ্জনক রিপ কারেন্ট তৈরি করতে পারে। রিপ কারেন্ট হলো একধরনের তীব্র ও সংকীর্ণ স্রোত, যা সমুদ্রতট থেকে সরাসরি গভীর সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়।
শনিবার (১৬ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন ন্যাশনাল হ্যারিকেন সেন্টারের পরিচালক মাইক ব্রেনান এক ব্রিফিংয়ে জানান, অ্যারিন রাতারাতি ভয়াবহ শক্তি অর্জন করেছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত এটি কেবল একটি ট্রপিক্যাল স্টর্ম ছিল, কিন্তু মাত্র একদিনের ব্যবধানে এটি “অত্যন্ত শক্তিশালী” ঝড়ে রূপ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে অ্যারিন ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থান করছে। শনি-রবিবারের মধ্যে এটি লিওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জ, ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ ও পুয়ের্তো রিকোর উত্তর দিক দিয়ে অতিক্রম করবে। এই পথে ৬ ইঞ্চি (১৫ সেমি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়াবে।
এটি ২০২৫ সালের আটলান্টিক মৌসুমের প্রথম হ্যারিকেন। আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টায় বাতাসের গতি অন্তত ৩৪ মাইল বেড়ে গেছে—শনিবার ভোরে ঘণ্টায় ১০০ মাইল থেকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ মাইলে।
সপ্তাহজুড়ে ঝড়টি ধীরে ধীরে উত্তর দিকে সরে বাহামার পূর্ব দিক ঘেঁষে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যারোলিনার আউটার ব্যাংকসের দিকে যেতে পারে। ব্রেনান সতর্ক করেছেন, এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে প্রাণঘাতী ঢেউ তৈরি হবে, বিশেষ করে ফ্লোরিডা ও মিড-অ্যাটলান্টিক অঞ্চলে ঝুঁকি বেশি থাকবে। এছাড়া বারমুডাতেও প্রবল ঢেউ ও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে।
ঝড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্র কোস্টগার্ড ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের সেন্ট থমাস ও সেন্ট জনসহ কয়েকটি বন্দর এবং পুয়ের্তো রিকোর সান হুয়ানসহ ছয়টি পৌরসভায় জাহাজ চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এনওএএ (NOAA) জানিয়েছে, এ বছর আটলান্টিকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সংখ্যক হ্যারিকেন দেখা যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্যাটাগরি-৪ ও ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে বলেও সংস্থাটি উল্লেখ করেছে।