যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির, হামলার পরিকল্পনার এবং ছাত্রলীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা করার অভিযোগে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে শিক্ষার্থীরা আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছেন। তাদের ফোনে প্রায় ২০টি আইডি থেকে নানা ধরনের নাশকতার পরিকল্পনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের যবিপ্রবি শাখার সাবেক সভাপতি সোহেল রানার নির্দেশে আটক দুইজন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছিলেন। রোববার রাত সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আটককৃতরা হলেন—ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাইম আশরাফি সজীব এবং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী রিয়াদ রায়হান।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল রাত ৯টার দিকে রিয়াদ রায়হানের আচরণ সন্দেহজনক দেখে তাকে ধরে ফোন চেক করলে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করা ও হামলার পরিকল্পনার প্রমাণ পাওয়া যায়। মেসেঞ্জারে দেখা যায়, তিনি নাইম আশরাফির সঙ্গে ক্যাম্পাস নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথোপকথন চালাচ্ছিলেন। পরে শিক্ষার্থীরা নাইমকেও ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে পিটিআর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফিরোজ কবির, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সোহেল রানা, জহিরুল ইসলাম সাগরসহ পিইএসএস বিভাগের ছাত্রলীগের আরও কিছু কর্মী জড়িত। এছাড়া তারা ফেক আইডি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হুমকিও দিচ্ছিল।
আটক রিয়াদ রায়হান স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যে জানিয়েছেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর তিনি ছাত্রলীগ থেকে বের হয়ে আন্দোলনে অংশ নেন, পরে কিছুদিনের জন্য কিছু ছাত্রলীগকর্মীর সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেন, “ছাত্রলীগ পুনর্বাসন করলে যারা আগে করতেন, তারা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করবে। আমি আর কোনো পরিকল্পনায় যুক্ত থাকব না।”
অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, কিছু সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির গোপন প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। শনিবার রাতে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার সময় দুইজনকে আটক করে প্রমাণ সংগ্রহের পর প্রশাসনের সহায়তায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মো. রাফিউল হাসান বলেন, আটককৃতদের সব ধরনের মব জাস্টিস থেকে রক্ষা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. উমর ফারুক জানান, সন্দেহজনক তথ্য পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত হয়ে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসনাত জানিয়েছেন, আটক দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, পরে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।