সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুর রহমানকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বিদ্যালয় থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে দিয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ক্লাস শেষ হওয়ার পর সকালে বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় এক ছাত্রীকে নিয়ে প্রায় ৩৭ মিনিট অবস্থান করেন শিক্ষক শফিকুর রহমান। এ ঘটনা জানাজানি হলে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম, বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের কোনো সুষ্ঠু সমাধান না পেয়ে ক্ষুব্ধ জনতা ও ইউপি সদস্য ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন।
ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, শফিকুর রহমানকে অনৈতিক কাজে জড়াতে দেখে স্থানীয়রা ধরে ফেলেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে তদন্তও চলমান ছিল, যেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে তিনি মেয়েদের পড়াতে পারবেন না। কিন্তু সেই তদন্তের ফল প্রকাশ না করেই তিনি আবার একই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত হলেন।
তবে শিক্ষার্থীরা ভিন্ন দাবি করেছে। তাদের ভাষ্য, স্যারকে অন্যায়ভাবে বিদ্যালয় থেকে বের করে ইউনিয়ন পরিষদে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে তারা একত্রিত হয়ে স্যারকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এ সময় বাইরে থেকে আসা কিছু লোকজন হুমকি-ধমকি দেয়, যাদের মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মীরাও ছিলেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক শফিকুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফাঁসানো হচ্ছে। আপনারাই দেখেছেন, শিক্ষার্থীরা আমাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্ধার করেছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন, তবে এখনো কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাননি। তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই শোকজসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এভাবে একজন শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে টেনে বের করা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং প্রতিষ্ঠানের সুনামের জন্য ক্ষতিকর।
প্রধান শিক্ষক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।