Monday, August 18, 2025
spot_imgspot_img
Homeসর্বশেষ৫১ লাখের মিনি স্টেডিয়াম এখন ১৪ কোটির প্রকল্প

৫১ লাখের মিনি স্টেডিয়াম এখন ১৪ কোটির প্রকল্প

দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি স্টেডিয়ামের নির্মাণ ব্যয় ছিল প্রায় ৫১ লাখ টাকা। তবে কয়েক বছরের ব্যবধানে সেই ব্যয় প্রায় ২৮ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটিরও বেশি। গতকাল রোববার একনেকের বৈঠকে উপদেষ্টাদের আপত্তি সত্ত্বেও প্রকল্পটি অনুমোদন দেন প্রধান উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার জোরালো অনুরোধে।

একনেক বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রায় সবাই আপত্তি তুলেছিলেন। তবুও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের অনড় অবস্থানের কারণে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়।

সরকারি নথি বিশ্লেষণে দেখা যায়, ‘শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম’ নামে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের প্রথম সংস্করণ অনুমোদিত হয়েছিল ২০২১ সালে। সেখানে প্রতি স্টেডিয়ামের গড় ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তবে সংশোধিত প্রস্তাবে সেই ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ২০ লাখ টাকায়।

বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম ধাপে ২০১৬-২০১৯ মেয়াদে ১৩১টি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছিল ৬৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, অর্থাৎ প্রতিটির গড় খরচ ছিল প্রায় ৫১ লাখ টাকা। এর তুলনায় চলমান প্রকল্পে একেকটি স্টেডিয়ামের খরচ প্রায় ২৮ গুণ বেশি।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখিয়েছে—ভূমি অধিগ্রহণ, জমি ভরাট, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, জমি-সংক্রান্ত বিরোধ ও রেট শিডিউলের পরিবর্তন। এসব যুক্তি দেখিয়ে প্রথমে ২ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হলেও পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৯২১ কোটিতে।

পরিকল্পনা কমিশন ব্যয় কিছুটা কমানোর সুপারিশ করলেও তা কার্যকর হয়নি। শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা, যা মূল অনুমোদিত ব্যয়ের চেয়ে ১ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বেশি। একই সঙ্গে প্রকল্প থেকে শেখ রাসেলের নামও বাদ দেওয়া হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, স্টেডিয়ামের সংখ্যা ৮ শতাংশের মতো বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে ৭৩ শতাংশের বেশি, যা অস্বাভাবিক।

সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, ব্যয় বাড়ানো নিয়ে কমিশন প্রশ্ন তুলেছে। বিশেষ করে রেট শিডিউলকে কেন্দ্র করে এ খরচ ফুলিয়ে ফাঁপানো হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব বলেন, আগের প্রকল্পে খাস জমি ব্যবহার করা হয়েছিল, ফলে ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হয়নি। কিন্তু নতুন প্রকল্পে খাস জমি পাওয়া যায়নি, তাই অধিগ্রহণের খরচ যুক্ত হয়েছে। এছাড়া নতুন নকশায় সীমানা প্রাচীরসহ অতিরিক্ত কাঠামো যোগ হওয়ায় ব্যয় বেড়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments