সরকার পরিবর্তনের পর দেশের আর্থিক খাতে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এ সময়ে সংস্থার প্রধান এ.এফ.এম. শাহীনুল ইসলাম দাবি করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার নামে একটি ‘ব্যক্তিগত ভিডিও’ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এটি ভুয়া ভিডিও, যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্রের অংশ। ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ব্যাংকিং খাতের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া মিশ্র।
শাহীনুল ইসলাম বলেন, “আমি কি এমন কাজ করতে পারি? এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র আমার বিরুদ্ধে সক্রিয়। আমার কর্মকাণ্ডে বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ ও প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এজন্য তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। আমার অফিস ও মিটিংয়ের ভিডিওর সঙ্গে মুখাবয়ব জুড়ে অসামাজিক ও কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট তৈরি করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, সরকারের পরিবর্তনের পর দেশের পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারের দায়িত্ব তাকে দেওয়া হয়েছে। এ কাজে তাকে বহু শত্রুর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কোটি কোটি টাকা ফ্রিজ করা ও মামলা করার কারণে প্রভাবশালীদের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এখন তারা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে হেয় করার চেষ্টা করছে।
বিএফআইইউ প্রধান বলেন, এই ষড়যন্ত্র চালানো চক্র সুবিধা পেতে চাইছে। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন, তিনি ভয় পাননি এবং দেশের মানুষের অর্থ ফেরাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আবেগ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক আমার প্রাণের প্রতিষ্ঠান। এর সুনাম রক্ষায় সবাই সতর্ক থাকা উচিত। সামাজিক মাধ্যমে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখালে প্রকৃত অপরাধী আড়ালে চলে যাবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, “বিএফআইইউ একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবে না।”
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি এ.এফ.এম. শাহীনুল ইসলাম বিএফআইইউর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর আগে তিনি সংস্থার উপ-প্রধান ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি দেশের আর্থিক খাতে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন, যা কিছু প্রভাবশালী মহলের স্বার্থে আঘাত করেছে।
শাহীনুল ইসলাম এই বিতর্ককে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করে সকলের কাছে ধৈর্য ধরে সত্য উদঘাটনের আহ্বান জানিয়েছেন।