কল্পনা করা যায়—শত বছরের পুরোনো একটি কফিন খোলা হলো আর ভেতরে পাওয়া গেল জীবন্তের মতো মুখ? কঙ্কাল নয়, ধুলোমলিন হাড় নয়—বরং কোমল ত্বক, অক্ষত পোশাক এবং স্বাভাবিক ভঙ্গিতে শুয়ে থাকা এক সম্ভ্রান্ত নারী।
চীনের জিয়াংসু প্রদেশে ঠিক এমনই এক বিস্ময়কর আবিষ্কার ঘটে। প্রত্নতত্ত্ববিদরা সেখানে একটি প্রাচীন পাথরের কফিনে খুঁজে পান মিং রাজবংশের এক নারীর দেহাবশেষ। প্রায় ৬০০ বছর ধরে অক্ষত থাকা এই দেহ যেন সময়কে অস্বীকার করে টিকে ছিল।
আবিষ্কারের সময় দেখা যায়, নারীর শরীর একটি রহস্যময় তরলে নিমজ্জিত ছিল। ত্বক, হাত এমনকি চোখের পাপড়িও অক্ষত ছিল—যেন এখনো জীবিত। তার পরনে ছিল ঐ সময়কার অভিজাত পোশাক, আঙুলে শোভা পাচ্ছিল কারুকার্যময় আংটি। এসব নিদর্শন তার উচ্চ সামাজিক মর্যাদার সাক্ষ্য বহন করে।
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, এই দেহ সংরক্ষণে কোনো মমিকরণের কৃত্রিম প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অক্সিজেনহীন কফিন, ভেতরের অজানা তরল এবং মাটির বিশেষ পরিবেশের বিরল সমন্বয়ে এটি প্রাকৃতিকভাবেই সংরক্ষিত হয়।
এই আবিষ্কার প্রত্নতত্ত্ববিদদের জন্য বিরল সম্পদ। কারণ এটি শুধু প্রাচীন মিং রাজবংশের সংস্কৃতি ও জীবনধারার প্রমাণই নয়, বরং বৈজ্ঞানিক রহস্যও বটে। কীভাবে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দেহ অক্ষত রইল—এখনো তার পূর্ণ ব্যাখ্যা মেলেনি।
আজও এই দেহ চীনের অন্যতম বিখ্যাত প্রাচীন মমি হিসেবে পরিচিত। সময়ের অতল থেকে উঠে আসা এ নারীর নীরব উপস্থিতি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—ইতিহাস আসলে এখনো বেঁচে আছে, কেবল তার পর্দা উন্মোচনের অপেক্ষা।