আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চূড়ান্ত করেছে নির্বাচনের রোডম্যাপ। তবে নতুনত্বহীন এই পরিকল্পনা নিয়ে সমালোচনা উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এটি আসলে একটি রোডম্যাপ নয়, বরং অতীতের নমুনা দেখে তৈরি একটি সাধারণ চেকলিস্ট মাত্র।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা ধরা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তফসিল থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত দুই মাস (৬০ দিন) সময় রাখা হয়েছে। প্রবাসী ভোটারদের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই এই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে কমিশনের অভিজ্ঞ কিছু কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ—পরিকল্পনা প্রণয়নের সময় তাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। ইসির কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন শাখা থেকে ২৬টি বিষয়ভিত্তিক কর্মতালিকা সংগ্রহ করে একজন উপসচিবের তত্ত্বাবধানে কম্পিউটারে টাইপ করে পুরো পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে।
রোডম্যাপে জনসংযোগ শাখার উদ্যোগে সেপ্টেম্বরে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু হয়ে দেড় মাসের মধ্যে শেষ করার কথা বলা হয়েছে। গত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে এই সময়সীমা ছিল দুই মাস।
এ ছাড়া নির্বাচনি সরঞ্জামের মজুত, পরীক্ষা ও চাহিদা নির্ধারণের নির্দেশনা তফসিল ঘোষণার ১৫ দিন আগে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের দেওয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে জানুয়ারির শেষদিকে ব্যালট মুদ্রণের জন্য ১৫ দিন সময় ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে অক্টোবরের মধ্যে বিভিন্ন নির্দেশিকা, পোস্টার, পরিচয়পত্র ইত্যাদি মুদ্রণ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আগস্টের মধ্যে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও আচরণবিধি চূড়ান্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ৩০০ আসনের আসনভিত্তিক ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ আছে।
তফসিল ঘোষণার পর প্রবাসী ভোটারদের ব্যালট ডাকযোগে পাঠানো হবে। সেখানে কেবল দলের প্রতীক থাকবে, প্রার্থীর নাম নয়। প্রতীক নির্ধারণের পর প্রবাসীরা ভোট দিয়ে তা ডাকযোগে ফেরত পাঠাবেন।
রোডম্যাপে আরো রয়েছে—হেলিকপ্টার অবতরণস্থল নির্ধারণ, অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা ও গ্রহণ, নির্বাচনি ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ও অ্যাপ প্রস্তুতকরণ ইত্যাদি।
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এ কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে