দীর্ঘদিন ধরে চলমান চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ মেটাতে দুই দেশ ইতিবাচক পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি মাসের শেষের দিকে চীন সফর করবেন এবং সেই সময় সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ বৈঠকেও অংশ নেবেন। এতে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এর আগে দুই শীর্ষ নেতা ২০২৪ সালের অক্টোবরে কাজানে ব্রিকস সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন।
ভারত সফররত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই দিল্লিতে বৈঠকে বলেন, ভারত ও চীন একে অপরকে ‘প্রতিপক্ষ বা হুমকি’ হিসেবে না দেখে ‘অংশীদার’ হিসেবে দেখার প্রয়োজন।
সীমান্ত নির্ধারণে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অস্বচ্ছতা মেটানোর উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার দিল্লিতে ২৪তম বিশেষ প্রতিনিধি স্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। চীনা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ওয়াং ই এবং ভারতের পক্ষে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সীমান্ত বিরোধ সমাধানে একটি বিশেষজ্ঞ দল ও একটি কার্যকরী দল গঠন করা হবে। এছাড়া সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের কূটনৈতিক ও সামরিক ব্যবস্থাপনা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
দোভাল বৈঠকে মন্তব্য করেছেন, সীমান্তে শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। ওয়াং ই বলেন, দুই দেশই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে যা কোনো দেশের স্বার্থে উপকারী নয়। সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং দীর্ঘমেয়াদে সুসম্পর্ক দুই দেশের স্বার্থ পূরণ করবে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই পূর্বে পৃথক বৈঠকেও সীমান্ত শান্তি এবং উত্তেজনা প্রশমনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। জয়শঙ্কর বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সংবেদনশীলতা ও স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হবে।
মোদি বলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে দেখা করে খুশি হয়েছি। কাজানে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর পারস্পরিক স্বার্থ ও সংবেদনশীলতাকে সম্মান করে সম্পর্ক উন্নতি ঘটেছে। তিনি তিয়ানজিনে এসসিও শীর্ষ বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন।
মোদি চীন সফরে যাচ্ছেন এমন সময়ে যখন লাদাখের গালওয়ান সীমান্ত সংঘাতের পরও সমস্যার পুরো সমাধান হয়নি এবং পাকিস্তানের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের সময়ে চীনের পাকিস্তানকে সমর্থনের অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ানে সংঘর্ষে ভারতীয় ও চীনা সেনা নিহত হন।
দুই দেশের বাণিজ্য পুনরায় শুরু করার জন্য বিশেষ সীমান্ত রুট যেমন লিপুলেখ পাস, শিপকি লা ও নাথু লা পাস ব্যবহার করার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। গালওয়ান সংঘর্ষ ও কোভিড মহামারীর কারণে এই সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ ছিল।