রাজধানীর গুলশানে দুই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে ব্যারিস্টার মো. ওমর শোয়েব চৌধুরী ও তার স্ত্রী সাথীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) গুলশান থানায় মামলা করেন নির্যাতিত এক শিশুর বাবা জুয়েল মিয়া।
নির্যাতনের শিকার শিশুর বয়স ১২ বছর ও অপরজনের ১১ বছর। তাদের বাড়ি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে।
মামলার এজাহার আদালতে পৌঁছানোর পর বুধবার (২০ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুব এজাহার গ্রহণ করে আগামী ১৪ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এদিন দুই শিশুকে আদালতে হাজির করা হলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। শিশু দুটিকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, এক বছর আগে ১২ বছর বয়সী শিশুকে ছয় হাজার টাকা বেতনে ওই ব্যারিস্টার দম্পতির বাসায় কাজের জন্য নেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, শিশুটি ওমর শোয়েব চৌধুরীর সন্তানকে দেখাশোনা করবে। ৬ মাস আগে ১১ বছর বয়সী শিশুকেও একই বাসায় কাজে পাঠানো হয়।
ভিডিও কলে দুই শিশুকে তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে দেয়ার সময় তাদের গা-মাথা ওড়নায় ঢেকে রাখা হতো। বড় বোনের বিয়ের কারণে ১২ বছর বয়সী শিশুকে বাড়িতে ফেরানোর জন্য তার বাবা বাসার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে গত ১৭ আগস্ট দুই শিশুকে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে পাঠানো হয় এবং এরপর তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়া হয়।
বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুই শিশুর হাত, পা, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে পোড়া, ছ্যাঁকা ও আঘাতের চিহ্ন। শিশুরা জানায়, বাসায় সামান্য ভুলত্রুটি হলেই তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন করা হতো।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. সালাউদ্দিন কাদের সাউন বলেন, “দরিদ্র ও অভাব-অনটনের কারণে মেয়েদের গৃহকর্মীর কাজে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা পা টেপানোর মতো অনৈতিক কাজে বাধ্য করা হতো। রাজি না হওয়ায় নির্যাতন করা হতো।”
অভিযোগের বিষয়ে ব্যারিস্টার দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।