ইন্টারনেটে নিয়মিত অশ্লীল ভিডিও দেখার কারণে এক ব্যক্তি নারীদের নির্দিষ্ট শারীরিক গড়নে আসক্ত হয়ে পড়েন। বলিউড অভিনেত্রী নোরা ফাতেহি ছিলেন তার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। কিন্তু স্ত্রী সেই ফিটনেস অর্জন করতে না পারায় স্বামীর মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়। একপর্যায়ে তিনি জোর করে স্ত্রীকে নোরার মতো বানানোর চেষ্টা শুরু করেন। এজন্য প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যায়াম করানো ছাড়াও উপোস থাকতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা শিবম উজ্জ্বল এমন নির্যাতন চালাতেন। তিনি স্থানীয় এক সরকারি স্কুলে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক। তার স্ত্রী শানু ওরফে শানভি গাজিয়াবাদের মেয়ে। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়েছিল।
শানুর অভিযোগ, স্বামী তার ফিটনেস নিয়ে সবসময় অসন্তুষ্ট ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন ভিডিও দেখা এবং তুলনা করে তাকে হেয় করতেন। প্রতিদিন প্রায় তিন ঘণ্টা করে জোরপূর্বক ব্যায়াম করাতেন। কোনো দিন ব্যায়াম বাদ দিলে খাবার খেতে দেওয়া হতো না।
নির্যাতনের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজনও জড়িত ছিলেন বলে দাবি করেন শানু। তিনি বলেন, “শিবম সবসময় আমাকে বডি শেমিং করত। আমার গড়পড়তা উচ্চতা আর ফর্সা রং থাকা সত্ত্বেও কুৎসিত বলত। শুধু শিবম নয়, পরিবারের অন্যরাও অপমান করত।”
গর্ভবতী হওয়ার পরও শানু রেহাই পাননি। স্বামী ও তার পরিবার গর্ভধারণ মেনে নেয়নি। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ফলে গর্ভপাত হয়ে যায়। পরবর্তীতে সেই দায়ও শানুর ঘাড়ে চাপানো হয়।
শেষ পর্যন্ত, চলমান নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১৪ আগস্ট তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, যৌতুক দাবি, জোরপূর্বক গর্ভপাত, ব্ল্যাকমেল এবং তালাকের হুমকির কথা উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্তাধীন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শিবম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।