“আমার ছোট ছেলেটি জানেই না ফল বা সবজির স্বাদ কেমন। গত পাঁচ মাস ধরে আমরা কোনো ধরনের আমিষ খাবারও খেতে পারিনি। ওর বয়স মাত্র চার বছর, অথচ ফলমূল কিংবা সবজি খাওয়ার অভিজ্ঞতাই নেই।”
এভাবেই নিজের দুঃখ-কষ্টের কথা জানালেন গাজার শহরে পাঁচ সন্তানের জননী ৪১ বছর বয়সী রীম তৌফিক খাদার। দুর্ভিক্ষে ক্ষতিগ্রস্ত জীবনের বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “দুর্ভিক্ষের ঘোষণা অনেক দেরিতে এলেও সেটি খুবই জরুরি ছিল।”
জাতিসংঘের সমর্থিত এক প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো গাজা উপত্যকার কিছু অংশে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণার পর সেখানকার অনেক মানুষ বিবিসিকে জানিয়েছেন, কীভাবে অনাহার তাদের শরীর ও জীবনকে ধ্বংস করছে।
জাতিসংঘের দাবি, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েল ব্যাপক বাধা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, “গাজার দুর্ভিক্ষ একটি মানবসৃষ্ট ট্র্যাজেডি, নৈতিকতার অবক্ষয় এবং মানবতার ব্যর্থতা। দুর্ভিক্ষ কেবল খাদ্যের অভাব নয়; এটি মানুষের টিকে থাকার মৌলিক ব্যবস্থার ইচ্ছাকৃত পতন। মানুষ অনাহারে মরছে, শিশুদের মৃত্যু হচ্ছে, অথচ যারা দায়িত্বে আছে তারা তাদের কর্তব্যে ব্যর্থ হচ্ছে।”
গাজায় অপুষ্টি এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কেবল জুলাই মাসেই ১২ হাজারের বেশি শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। নবজাতকের ওজন অস্বাভাবিকভাবে কম বা তারা জন্ম থেকেই অপুষ্ট। ইতোমধ্যে উপত্যকার প্রায় ৯৮ শতাংশ আবাদি জমি ধ্বংস হয়ে গেছে।