Saturday, August 23, 2025
spot_imgspot_img
Homeদেশের খবরপুলিশের গুলিতে পা হারানো ইমাম রফিকুলের মানবেতর জীবন

পুলিশের গুলিতে পা হারানো ইমাম রফিকুলের মানবেতর জীবন

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের স্থানীয় মসজিদের ইমাম ছিলেন হাফেজ রফিকুল ইসলাম। অল্প আয়ের সেই কাজ দিয়েই কোনোভাবে সংসার চলত। ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের ডাকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশে অংশ নিলে পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর গুলিতে পা হারান তিনি। যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় এক দশক পার হলেও আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। বর্তমানে পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে চরম দুঃসহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। কখনো একবেলা খাবার জোটে, আবার অনেক সময় অনাহারেই থাকতে হয়।

হাফেজ রফিকুল জানান, ঘটনার পর পুলিশ ও সরকারি বাহিনীর ভয়ে খোলাখুলি চিকিৎসাও নিতে পারেননি। গোপনে সীমিত চিকিৎসা হলেও অবস্থার অবনতি হয়। পরে ঢাকার এক হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শে তার পা কেটে ফেলতে হয়। বর্তমানে কৃত্রিম পা নিয়ে চলাফেরা করলেও কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। আগে জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ ও ইমামতির মাধ্যমে কোনোমতে সংসার চললেও এখন আর তা সম্ভব নয়। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

তিনি বলেন, শাপলা চত্বরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও হেলমেট বাহিনীর যৌথ অভিযানে অন্ধকারে গুলি ও টিয়ারশেলের আঘাতে অসংখ্য মানুষ আহত হন। জীবন বাঁচাতে পালাতে গিয়ে তিনি পদদলিত হয়ে গুরুতর আহত হন এবং পরবর্তীতে পুলিশের গুলিতে পা হারান। এরপর কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও পরে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও পুলিশ বারবার হয়রানি করেছে। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার উদ্যোগ নিলেও রাজনৈতিক বাধা ও ভিসা না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে নানাবাড়ির ঘরে পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। নিজের কোনো সম্পদ নেই। দিনমজুর ভাড়া করে জমি চাষ করতে হয়। সংসারের অভাব-অনটনে পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, “জুলুমবাজ বিগত আওয়ামী সরকার ও তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। জুলাই বিপ্লব এবং ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে নিহত-আহতদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে বর্তমান সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আমি আকুতি জানাচ্ছি।”

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments