বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আনসার-ভিডিপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেছেন, আনসার বাহিনীকে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও কার্যকর ও সক্ষম করে গড়ে তোলা হচ্ছে। শনিবার (২৩ আগস্ট) গাজীপুরের সফিপুরে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে এপিসি ও পিসি সদস্যদের সতেজকরণ প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা জানান।
মহাপরিচালক বলেন, “আনসার বাহিনীর লক্ষ্য শুধু সংখ্যা নয়, বরং নিরাপত্তা সেবার মান উন্নয়ন। গ্রামীণ অঞ্চল থেকে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ড পর্যন্ত আনসার বাহিনী নিরাপত্তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বাহিনী ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।”
তিনি জানান, আনসার বাহিনী চারটি স্তম্ভের ওপর কাজ করছে। উপজেলা ও থানা আনসার, অঙ্গীভূত আনসার, ব্যাটালিয়ন আনসার এবং ভিডিপি/টিডিপি। প্রতিটি স্তম্ভের দায়িত্ব আলাদা হলেও দেশের সার্বিক নিরাপত্তায় সব স্তম্ভই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্যাটালিয়ন আনসার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। অঙ্গীভূত আনসাররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পয়েন্ট সিকিউরিটিতে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। উপজেলা আনসার সদস্যরা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, এবং ভিডিপি/টিডিপি সদস্যরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও সচেতনতায় সরাসরি অংশ নিচ্ছে।
মহাপরিচালক সতেজকরণ প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “রাষ্ট্রের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ বাহিনী গড়ে তুলতে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। সমাজ ও মানুষের সঙ্গে আনসার বাহিনী সরাসরি সম্পৃক্ত। নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই প্রশিক্ষণ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কেপিআই নিরাপত্তায় এটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।”
তিনি অতীতের অবদান স্মরণ করে বলেন, “৫ আগস্ট দেশের নিরাপত্তাহীনতার সময়ে আনসার বাহিনী সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ভবিষ্যতেও আনসার-ভিডিপি সদস্যরা সুপ্রশিক্ষিত হয়ে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”
এবারের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ১০ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত সফিপুর একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১,১৬০ জন সদস্য অংশ নেন, যার মধ্যে ১,১৩৬ জন সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। প্রশিক্ষণে মৌলিক শরীরচর্চা, অস্ত্র ও সাধারণ ড্রিল, দায়িত্ব ও শৃঙ্খলা, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক সচেতনতা, নারী ও শিশুর সুরক্ষা, মাদকবিরোধী কার্যক্রম, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ এবং সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ রফিকুল ইসলাম, একাডেমি কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ নুরুল আবছারসহ বাহিনীর অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।