রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত না থামলে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ হতে পারে উচ্চমাত্রার শুল্ক, বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা অথবা উভয়ই।
সম্প্রতি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে মার্কিন সরকারের মালিকানাধীন একটি কারখানা ধ্বংস হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে তিনি বলেন, “এই ঘটনার জন্য আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। শুধু এটিই নয়, এই যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো কিছু নিয়েই আমি খুশি নই।”
তিনি আরও জানান, “আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা সংকট সমাধানের একটি পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করব। যদি সমাধান পাই, তবে সেটিই আমার জন্য সন্তোষজনক হবে। কিন্তু সমাধান না এলে আমাকে সিদ্ধান্তে আসতে হবে, আর সেই সিদ্ধান্ত হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রসঙ্গত, ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান তার প্রশাসনের অন্যতম অগ্রাধিকার। গত আট মাস ধরে তিনি এ নিয়ে উদ্যোগও চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সময়ে একাধিকবার পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পাশাপাশি গত ১৫ আগস্ট আলাস্কায় তার সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেন ট্রাম্প। তিন দিন পর তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন।
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাম্প বলেছিলেন, পুতিন ও জেলেনস্কি উভয়ের সঙ্গেই তার আলোচনা ইতিবাচক হয়েছে এবং শিগগিরই একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। পাশাপাশি পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে সরাসরি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এ বক্তব্যের বিপরীতে রাশিয়ার অবস্থান ভিন্ন। সম্প্রতি রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই এবং নিকট ভবিষ্যতে এমন বৈঠকের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। তার ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে সমঝোতার কিছু মৌলিক বিষয় আছে, কিন্তু প্রতিটি ইস্যুতেই জেলেনস্কির অবস্থান নেতিবাচক।
ল্যাভরভের মন্তব্য প্রচারিত হওয়ার পরই ট্রাম্প তার কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান এবং রাশিয়াকে আল্টিমেটাম দিয়ে দুই সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দেন।