Saturday, August 23, 2025
spot_imgspot_img
Homeসর্বশেষঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা: পরিবারের একমাত্র ভরসা হারাল তিন পরিবার

ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা: পরিবারের একমাত্র ভরসা হারাল তিন পরিবার

“গাড়ি চাপায় আমার ছেলেটাকে কেড়ে নিল, সংসারের ভরসাটাই শেষ হয়ে গেল”—কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমন কথাই বলছিলেন নিহত কাইয়ুমের মা সালেহা বেগম (৬৫)।

২২ বছর বয়সী কাইয়ুম মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রসুনিয়া ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন তিনি। বড় ভাই মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় পরিবার চালানোর পুরো দায়িত্ব ছিল কাইয়ুমের কাঁধে।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মোটরসাইকেলে থাকা কাইয়ুমসহ তিন যুবক নিহত হন। শ্রীনগর থেকে কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে তারা বাড়ি ফিরছিলেন। নিহত তিনজনই টাইলস মিস্ত্রি ছিলেন এবং পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।

অন্য নিহতরা হলেন কাইয়ুমের প্রতিবেশী আওলাদ হোসেন (২৩) ও আওলাদের চাচা হাবিব শেখ (২২)।

হাবিবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জরাজীর্ণ টিনের ঘরে নিস্তব্ধ হয়ে বসে আছেন তাঁর মা–বাবা। প্রিয় ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তারা। অন্যদিকে আওলাদের ঘরে শোকের মাতম। মাটিতে শুয়ে আহাজারি করছেন মা জোবেদা বেগম, পাশে স্তব্ধ হয়ে বসে আছেন বাবা আনোয়ার হোসেন।

জোবেদা বেগম বলেন, “কাজের কথা বলে ঘর থেকে বের হইল, ফিরল লাশ হয়ে। আমার ছেলেকে ছাড়া আমি কীভাবে বাঁচব?”

স্থানীয়রা জানান, কিছুদিন আগে চারজন মিলে পুরোনো একটি মোটরসাইকেল কিনেছিলেন কাজে যাতায়াতের জন্য। সেই মোটরসাইকেলেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা, ঝরে যায় তিনটি প্রাণ।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় জানাজা শেষে নিহতদের মরদেহ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে হাঁসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আবু নাঈম সিদ্দিক জানান, দুর্ঘটনায় জড়িত প্রাইভেটকারের মালিক ও চালককে শনাক্তের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments