চালের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও কয়েক মাস ধরে বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। নতুন করে দাম না বাড়লেও গত তিন-চার মাস ধরে চালের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। তবে আশার আলো দেখাচ্ছে ভারতীয় চাল আমদানি। দিনাজপুরের হিলি ও বেনাপোল স্থলবন্দরসহ সীমান্ত দিয়ে আমদানি শুরু হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রত্যাশা, বাজারে সরবরাহ বাড়লে দামে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। শনিবার (২৩ আগস্ট) রাজধানীর রামপুরা, মধুবাগ, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজারে ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।
চাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারতীয় চাল বাজারে এলেও দামের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তবে যদি আমদানি প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং পরিমাণে বেশি চাল আসে, তাহলে বাজারে চাপ কমবে ও দাম কমার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এতে ভোক্তারাও উপকৃত হবেন।
পাইকারি বাজারে বর্তমানে মিনিকেট চাল কেজি প্রতি ৭৫-৮০ টাকা, আটাশ বালাম ৬৫-৬৮ টাকা, স্বর্ণা মোটা চাল ৫৬-৫৮ টাকা, নাজিরশাইল ৮০-৮৫ টাকা, বাসমতী ৯৫-১০০ টাকা এবং চিনিগুঁড়া ১০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি ৭৮-৮৫ টাকা, আটাশ বালাম ৬৫-৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯০ টাকা, স্বর্ণা ৫৫-৬০ টাকা, পাইজাম ৬২-৬৫ টাকা, বাসমতী ৯৫-১২০ টাকা ও চিনিগুঁড়া ১৩০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শাহীন বলেন, “চালের দাম নতুন করে বাড়েনি। যা বাড়ার ছিল, আগেই বেড়েছে। গত কয়েক মাস ধরে প্রায় একই দামে চাল বিক্রি করছি। তবে ভারতীয় চালের সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমতে পারে।”
রামপুরার খুচরা বিক্রেতা মাহবুব জানান, “দাম আগে থেকেই বেশি। এখন কমারও তেমন কোনো লক্ষণ নেই। তবে শুনছি আমদানি করা চাল বাজারে আসছে। সরবরাহ যদি স্বাভাবিক হয়, দাম কিছুটা কমতে পারে।”
চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চলতি বছরের শুরুতে সরকার আমদানি শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক প্রত্যাহারসহ নানা পদক্ষেপ নেয়। ফলে আমদানি করা চাল তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৩২৮ দশমিক ৯ গ্রাম চাল খায়। শহরাঞ্চলে এই পরিমাণ ২৮৪ দশমিক ৭ গ্রাম। সব মিলিয়ে বছরে দেশের জন্য প্রয়োজন প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টন চাল। অথচ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ উৎপাদন করেছে চার কোটিরও বেশি চাল।