রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে দূরপাল্লার আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেমস (ATACMS) ব্যবহার করতে পারছে না ইউক্রেন। কারণ, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর (পেন্টাগন) গোপনে এই অস্ত্র ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে রাশিয়ার অভ্যন্তরে আঘাত হানার ক্ষেত্রে কিয়েভের সক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। বিষয়টি জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, একদিকে ওয়াশিংটন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনায় বসাতে চেষ্টা করছে, অন্যদিকে পেন্টাগনের কড়া অনুমোদন প্রক্রিয়া ইউক্রেনকে এই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করছে। বর্তমানে এই অস্ত্র ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথের হাতে।
সম্প্রতি আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। তবে এসব আলোচনায় কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ট্রাম্প পরে জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বা বাড়তি শুল্ক আরোপের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র বিবেচনা করছে।
যদিও ট্রাম্প পুতিন ও জেলেনস্কির সরাসরি বৈঠকের উদ্যোগ নিয়েছেন, এখনো কোনো ফল মেলেনি। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এনবিসিকে জানান, বৈঠকের জন্য কোনো এজেন্ডা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্যমতে, পেন্টাগনের নীতিনির্ধারক এলব্রিজ কোলবি একটি বিশেষ “রিভিউ মেকানিজম” চালু করেছেন। এর মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুরোধ যাচাই-বাছাই করা হয়। শুধু মার্কিন অস্ত্র নয়, বরং ইউরোপীয় যেসব অস্ত্র মার্কিন প্রযুক্তি বা গোয়েন্দা তথ্যের ওপর নির্ভরশীল, সেগুলোও এই নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হয়েছে।
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, কেবল প্রতিরক্ষায় থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে জিততে পারবে না। তিনি মন্তব্য করেন—“আক্রমণ ছাড়া যুদ্ধ জেতা প্রায় অসম্ভব, জয় পাওয়া সম্ভব নয়।”
তবে মার্কিন কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেছেন, ট্রাম্পের মন্তব্যে নীতিগত কোনো পরিবর্তন আসেনি। পেন্টাগনের সীমাবদ্ধতা এখনো কার্যকর রয়েছে। যদিও হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চাইলে ট্রাম্প যেকোনো সময় সিদ্ধান্ত বদলে ইউক্রেনকে বৃহত্তর আক্রমণ চালানোর অনুমতি দিতে পারেন।