ভারতের নয়ডায় ৩৬ লাখ রুপির বেশি যৌতুকের দাবিতে এক নারীকে নির্যাতন করে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। রোববার (২৪ আগস্ট) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত নারী নিকির ছোট ছেলে তার মায়ের ওপর বাবা ও দাদীর চালানো নির্যাতনের ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেছে। সে জানিয়েছে, প্রথমে মাকে কিছু দিয়ে চাপা দেওয়া হয়, এরপর থাপ্পড় মেরে লাইটার দিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার গুরুতর আহত অবস্থায় নিকিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, আগুনে দগ্ধ অবস্থায় তাকে লাথি মারা হচ্ছে। আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, স্বামী ও শাশুড়ি চুল ধরে টেনে তাকে মারধর করছেন।
নিকি ও বিপিন ভাটি দম্পতির সংসার ছিল নয় বছরের। কিন্তু যৌতুকের চাপ সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারাতে হলো নিকিকে। তার বড় বোন কাঞ্চন দাবি করেছেন, যৌতুক না দেওয়ার কারণে তার বোনকে তাদের চোখের সামনে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। একই পরিবারের সদস্য হওয়ায় তাকেও যৌতুকের জন্য মারধরের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে নিকিকে ফোর্টিস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে তাকে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই মৃত্যু হয়। ঘটনার পর নিকির স্বামী বিপিন ভাটি, শাশুড়ি দয়া, শ্বশুর সতবীর ও শ্যালক রোহিত ভাটির বিরুদ্ধে কাসনা থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে এবং অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে স্বামী বিপিন ভাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। হিন্দিতে লেখা এক পোস্টে তিনি প্রশ্ন করেন—“তুমি আমাকে কেন বলোনি কী হয়েছিল? কেন আমাকে ছেড়ে গেলে? কেন তুমি এটা করলে? সবাই আমাকে খুনি বলছে, নিকি।” আরেক পোস্টে তিনি দাবি করেন, স্ত্রী চলে যাওয়ার পর তার জীবন ভেঙে গেছে এবং তিনি অন্যায়ের শিকার হচ্ছেন। এই পোস্টগুলো করা হয় গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা আগে।