Monday, August 25, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকরোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে যুক্তরাজ্য-কানাডাসহ পশ্চিমা ১১ দেশ

রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের পাশে যুক্তরাজ্য-কানাডাসহ পশ্চিমা ১১ দেশ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে পশ্চিমা বিশ্বের ১১টি দেশ বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। দেশগুলো হলো—অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, ডেনমার্ক, সুইডেন, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও ফিনল্যান্ড। তারা এক যৌথ বিবৃতিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় ঢাকার পাশে থাকার অঙ্গীকার জানায়।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর দমননীতির কারণে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটে। বর্তমানে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রিত রয়েছে এবং নতুন করে আরও অনেকে শরণার্থী হয়ে আসছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও রোহিঙ্গাদের দৃঢ় মনোবলকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, রাখাইনে বর্তমান নিরাপত্তা ও মানবিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। এই বাস্তবতায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে সহমর্মিতা ও মানবিকতা দেখিয়েছে, তার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। তারা শুধু আশ্রয় দেননি, বরং জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সহায়তাও দিয়ে যাচ্ছেন।

রোহিঙ্গারা নিজ ভূমিতে ফিরতে চায়, তবে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে ও টেকসই প্রত্যাবাসনের উপযোগী নয়। এজন্য প্রয়োজন একটি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল মিয়ানমার। তাই এখনই প্রত্যাবাসনের নির্দিষ্ট সময়সূচি দেওয়া সম্ভব নয় বলে দেশগুলো মনে করে।

যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের সেনা সরকার ও বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন কঠোরভাবে নিন্দা জানাই। অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ, মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশাধিকার এবং অন্যায়ভাবে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।

১১ দেশ পুনরায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাবে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বয় করে মিয়ানমারের পরিস্থিতি ও বাংলাদেশে এর প্রভাব পর্যবেক্ষণ করবে।

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আসন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠককে সামনে রেখে দেশগুলো বলেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি। বিশেষ করে মানবিক তহবিল কমে যাওয়ায় আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানো এবং ভবিষ্যতে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত করা দরকার। একই সঙ্গে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের প্রতিও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, যারা এতদিন উদারভাবে শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।

বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি। এতে তারা বাংলাদেশে অবস্থানকালে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবে। আট বছর পরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে আছে এবং সংকটের স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার অঙ্গীকার করছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments