ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে অব্যাহত ভারী বর্ষণের কারণে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে ভয়াবহ ভূমিধস ও হড়পা বানে অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় আরও ২৩ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেকে আটকে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রিয়াসি জেলার অর্ধকুয়ারির কাছে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাজারো পুণ্যার্থীর মধ্যে। স্থানীয় প্রশাসন, সেনা ও মন্দির কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করলেও প্রবল বর্ষণের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে। রিয়াসির সিনিয়র পুলিশ সুপার পরমবীর সিংহ নিহতের সংখ্যা ৩০ জনে দাঁড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
টানা তিন দিনের ভারী বৃষ্টিতে জম্মু-কাশ্মীরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে। সেতু ভেসে গেছে, রাস্তা ধসে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে অস্থায়ী ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে খাবার, চিকিৎসা ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানায়, আগামী দুই-তিন দিন পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। এ কারণে জম্মু, সাম্বা, রিয়াসি, উধমপুর, ডোডা ও কিশ্তওয়াড় জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে কাটরায় ‘লাল সতর্কতা’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বৈষ্ণোদেবী যাত্রা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
প্রতিবছর লাখো ভক্ত মন্দিরে সমবেত হন। এবারের দুর্ঘটনায় পুণ্যার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সেনা ও উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে রাস্তার কাদা ও বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ জটিল হচ্ছে। গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, পাহাড়ি এলাকায় টানা বর্ষণে ভূমিধসের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ফলে এ ধরনের প্রাণঘাতী প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভবিষ্যতে আরও ঘন ঘন ঘটতে পারে। তারা সকলকে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।