Wednesday, August 27, 2025
spot_imgspot_img
Homeপড়ালেখাডাকসু নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা: বাস্তব নাকি গণমাধ্যমের ‘সাজানো হাইপ’?

ডাকসু নির্বাচনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা: বাস্তব নাকি গণমাধ্যমের ‘সাজানো হাইপ’?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে চলছে প্রচারণার তীব্র প্রতিযোগিতা। প্রার্থীরা হলে-হলে ঘুরছেন, ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। বিশেষ করে যেসব প্রার্থীকে ‘হেভিওয়েট’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে, তাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি কৌতূহল ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, টেলিভিশন টকশো ও সংবাদপত্র সব জায়গায় তাদের প্রচারণা আলোচিত। তবে প্রশ্ন উঠছে—এই জনপ্রিয়তা কতটা বাস্তব, আর কতটা গণমাধ্যম নির্মিত ‘হাইপ’?

ছাত্র-রাজনীতিতে সক্রিয়তা এবং দলীয় পরিচয়ের কারণে কিছু প্রার্থী শুরু থেকেই হেভিওয়েট হিসেবে বিবেচিত। তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে সাংবাদিকরা ভিডিও ফুটেজ ও সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত থাকেন, যার ফলে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে মাঝে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে ছাত্রদলের মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান এবং ছাত্র শিবিরের জোট প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েমকে নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক কভারেজ থাকলেও অন্যান্য প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গণমাধ্যমের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। সামাজিক মাধ্যমে লাইভ, ভিডিও ও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে প্রার্থীরা নিজেদের জনপ্রিয় করে তুলতে চাইছেন। তবুও শিক্ষার্থীরা প্রার্থীর ব্যক্তিগত ও একাডেমিক যোগ্যতা, সাংগঠনিক অতীত বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আহসান হাবিব প্রান্ত বলেন, “গণমাধ্যমে যাদের হেভিওয়েট হিসেবে দেখানো হচ্ছে, তারা প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীদের অধিকার বাস্তবায়নে সক্রিয় নয়। প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীরা সুষ্ঠু নির্বাচনে ঠিকই নির্বাচিত হবেন।”

সমন্বিত শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী জামাল উদ্দিন খালিদ বলেন, “গণমাধ্যমে হেভিওয়েট হিসেবে যাদেরকে হাইলাইট করা হচ্ছে, সেটি মূলত প্রচারণার অংশ। যারা ভোটের মাঠে আছি, তাদের কাছে এটি কেবল সাজানো হাইপ।”

ডাকসু নির্বাচনে এবার ভিপি পদে ৪৫ জন, জিএস পদে ১৯ জন এবং এজিএস পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সম্পাদকীয় পদগুলোর মধ্যে বিভিন্ন পদে মোট প্রায় ২১৭ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন।

নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে—বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি ও প্রক্টরিয়াল টিম, পুলিশ এবং সাতটি প্রবেশমুখে ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে সেনাবাহিনী। নির্বাচনের দিন মেট্রোরেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বন্ধ থাকবে। ভোটের সময় বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক ও নির্বাচন পরিচালনায় যুক্ত ব্যক্তি ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। আবাসিক হলে নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে কোনো বহিরাগত প্রবেশ করতে পারবে না।

এই নির্বাচনের ফলাফলই নির্ধারণ করবে, গণমাধ্যমে যে জনপ্রিয়তা দেখানো হচ্ছে, তা শিক্ষার্থীদের চোখে কতটা বাস্তব।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments