তথ্য গোপন করার অভিযোগে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে। বিচারপতি মোহাম্মদ হাবিবুল গনি ও বিচারপতি এসকে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গত ১৯ আগস্ট এ আদেশ দেন।
রুলে স্বরাষ্ট্র সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, কুড়িগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন উইংয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের ২৮ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা (৬৭) ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার সাহেবগঞ্জ থানার খুবিরের কুটি গ্রামের বাসিন্দা। অভিযোগ, তিনি ১৯৭৬ সালে ভারত থেকে পালিয়ে এসে কুড়িগ্রামে আশ্রয় নেন এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করেন। পরে রাজনৈতিক প্রভাবের মাধ্যমে কুড়িগ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তিনি আগে জাতীয় পার্টির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং ১৯৯৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক।
কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “তার এনআইডিতে জন্মস্থান কুড়িগ্রাম উল্লেখ থাকলেও এটি তথ্য গোপনের মধ্যে পড়ে। জন্মনিবন্ধন সনদ ছাড়া এনআইডি প্রাপ্তি আইনসম্মত নয়। জেল রেকর্ড পরীক্ষা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।”
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলমগীর জানান, তথ্য গোপন করে এনআইডি নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। শাস্তি হিসেবে এক বছরের কারাদণ্ড বা ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অথবা উভয়ই হতে পারে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এটি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার মানহানি করার জন্য অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন চাইলে প্রমাণ দেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত।”
জনস্বার্থে কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার বাসিন্দা মো. মাহবুব হোসেন হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করলে এই রুল জারি হয়।