মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বিশ্বে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করতে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা হওয়া উচিত। তবে বেইজিং এটিকে অবাস্তব ও অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া আগ্রহ দেখিয়েছে, আমি বিশ্বাস করি চীনও রাজি হবে। আমরা আর পারমাণবিক অস্ত্র ছড়িয়ে পড়তে দিতে পারি না।”
কিন্তু এ বক্তব্যের জবাবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গু জিয়াকুন জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পারমাণবিক সক্ষমতা কোনোভাবেই একই স্তরে নয়। দুই দেশের কৌশলগত নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও নীতি ভিন্ন। তিনি বলেন, চীন “নো-ফার্স্ট-ইউজ” নীতি অনুসরণ করে—অর্থাৎ প্রথমে পারমাণবিক হামলা করবে না, বরং আত্মরক্ষার জন্যই এ অস্ত্র রাখে। তাই বেইজিং কোনো অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যাবে না। তার মতে, যেসব দেশ সর্বাধিক পারমাণবিক অস্ত্র মজুত রেখেছে, তাদেরই নিরস্ত্রীকরণের দায় বেশি।
ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার হাতে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের হাতে আছে প্রায় ৩ হাজার ৭০০। তুলনায় চীনের হাতে আছে মাত্র ৬০০, যদিও এ সংখ্যাই তাকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক শক্তি বানিয়েছে।
আলাস্কায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নতুন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির প্রস্তাব দেন। এদিকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান নিউ স্টার্ট চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে, যা কৌশলগত ওয়ারহেড ও ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ওপর সীমা আরোপ করে। রাশিয়া ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছে, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করলে তারাও একই পথে হাঁটবে।
ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরেই চীনকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছে। তবে চীন বরাবরই তা প্রত্যাখ্যান করেছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং তার পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।