Thursday, August 28, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকট্রাম্পের ফোন ধরেননি মোদি? বাড়ছে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন

ট্রাম্পের ফোন ধরেননি মোদি? বাড়ছে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টানা চারবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেছিলেন, কিন্তু মোদি একবারও সেই কল রিসিভ করেননি—এমন খবর প্রকাশ করেছে জার্মানির খ্যাতনামা দৈনিক ফ্র্যাঙ্কফুর্টার অ্যালগেমাইনে জাইটুং। সূত্র হিসেবে মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাম উল্লেখ না করলেও তারা জানিয়েছেন, কয়েকদিনের ব্যবধানে ট্রাম্পের চারবার ফোন করা সত্ত্বেও মোদি সাড়া দেননি।

শুধু জার্মান পত্রিকাই নয়, জাপানের নিক্কেই এশিয়াও একই খবর প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, এ ঘটনার কারণে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। ডয়চে ভেলে যখন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তখনো তারা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। মার্কিন প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে এখনো নিশ্চুপ। তবে খবরটি নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে।

ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার ওয়াশিংটন ডেস্ক জানিয়েছে, ট্রাম্প অনেক সময় ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন থেকেই বিদেশি নেতাদের ফোন করেন। এতে হোয়াইট হাউস সবসময় কলগুলোর ওপর নজর রাখতে পারে না, যা প্রশাসনের জন্য উদ্বেগজনক। জানা গেছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিসহ কয়েকজন বিশ্বনেতাকে নিজের ব্যক্তিগত নম্বর দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, মোদিকে ফোন করা হয়েছিল ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ফোন থেকে, ওভাল অফিস থেকে নয়।

ভারতে প্রশাসনিক প্রোটোকল অত্যন্ত কঠোর। সেই নিয়ম মেনেই হয়তো মোদি ব্যক্তিগত ফোনে আসা কল গ্রহণ করেননি বলে অনেকে মনে করছেন। তবে এ নিয়ে সরকার বা ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে কোনো ব্যাখ্যা আসেনি। এনডিটিভি জানিয়েছে, যদি খবরটি সত্য হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে এর প্রভাব দুই দেশের সম্পর্কের ওপর পড়বে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে ট্রাম্পের বারবার হস্তক্ষেপের দাবি মোদিকে বিপাকে ফেলেছিল। ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তার মধ্যস্থতায় দুই দেশের সংঘাত নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু ভারত সরকার বরাবরই জোর দিয়েছে যে, এটি সম্পূর্ণ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ফল, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। এ নিয়ে ভারতের সংসদে বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যও দাবি করেছিল।

অন্যদিকে, মার্কিন প্রশাসন একের পর এক শুল্ক আরোপ করে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ককে চাপের মধ্যে ফেলেছে। বর্তমানে ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব কারণেই মোদি ট্রাম্পের ফোন কল উপেক্ষা করে থাকতে পারেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক অনিন্দ্যজ্যোতি মজুমদার মন্তব্য করেছেন, “যদি ঘটনাটি সত্য হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে। ট্রাম্প এবং মোদি দুজনেই ব্যক্তিত্বে দৃঢ় এবং ইগো প্রবণ। তাই এই টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে। তবে সত্যতা প্রকাশ না করা পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা থেকেই যাবে।”

এদিকে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক কেবল রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে নয়। বরং দীর্ঘসূত্রিতা ও বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ভারতের জটিল অবস্থানও এর বড় কারণ। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তুলেছিল, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনে ভারত পরোক্ষভাবে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করছে। সেই কারণেই ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments