আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের জন্য দুঃসংবাদ এনেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন সরকার শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির অংশগ্রহণকারী ও সংবাদকর্মীদের ভিসার মেয়াদ সীমিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) প্রকাশিত প্রস্তাবিত নীতিমালায় এই তথ্য জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও কঠোর করার একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের এফ ভিসা, সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য জে ভিসা এবং সংবাদমাধ্যমের জন্য আই ভিসার নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করা হবে। আগে এসব ভিসার মেয়াদ সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি বা চাকরির সময়সীমার সঙ্গে সম্পর্কিত থাকলেও এখন সর্বোচ্চ চার বছর নির্ধারণ করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের ভিসা, যা আগে কয়েক বছরের জন্য কার্যকর থাকত, এবার তা কমিয়ে ২৪০ দিন করা হবে। চীনা নাগরিকদের জন্য এই সময়সীমা আরও কমিয়ে মাত্র ৯০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ভিসাধারীরা চাইলে মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মার্কিন সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৬ লাখ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এফ ভিসায় ছিলেন। একই অর্থবছরে (২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে) ৩ লাখ ৫৫ হাজার বিনিময় কর্মী এবং প্রায় ১৩ হাজার সাংবাদিক ভিসা পেয়েছিলেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অভিবাসন নীতি কঠোর করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। নতুন নীতি কার্যকর হলে শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাংবাদিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান আরও জটিল হয়ে উঠবে। আগে যেখানে সহজেই ভিসার মেয়াদ বাড়ানো যেত, এবার আলাদা আবেদন ছাড়া তা সম্ভব হবে না।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভিসাধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে কার্যকরভাবে ‘পর্যবেক্ষণ ও তদারকি’ করার উদ্দেশ্যে এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। জনগণকে ৩০ দিনের মধ্যে এই প্রস্তাব নিয়ে মতামত জানানোর সুযোগ দেওয়া হবে।
এর আগে ২০২০ সালেও একই ধরনের একটি নীতি প্রণয়ন করতে চেয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। তবে ২০২১ সালে জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে সেটি বাতিল করেন। সে সময় আন্তর্জাতিক শিক্ষাবিষয়ক অলাভজনক সংগঠন নাফসা—যা বিশ্বের ৪ হাজার ৩০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত—প্রস্তাবটির বিরোধিতা করে এবং বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছিল।
এছাড়া সম্প্রতি মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা (ইউএসসিআইএস) জানিয়েছে, তারা আবারও নাগরিকত্ব আবেদনকারীদের আবাসিক এলাকা পরিদর্শন শুরু করবে। এর মাধ্যমে আবেদনকারীর বসবাস, নৈতিক চরিত্র এবং মার্কিন মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকার যাচাই করা হবে।