দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে দায়ের করা মামলার আপিল শুনানির অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ আগামী ৪ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
এর আগে, গত ৩০ জুলাই আপিলের রায় সংক্রান্ত রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ৬ আগস্ট রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিল। তবে পরে সেটি একদিন পিছিয়ে ৭ আগস্ট ধার্য করা হয়।
রিভিউ শুনানিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন দোলন। অন্যদিকে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির ও অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী। রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার এম. আবদুল কাইয়ূম। এছাড়া ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।
প্রসঙ্গত, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১৯৮৬ সালে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে ‘রুলস অব বিজনেস’-এর আওতায় ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (পদমর্যাদাক্রম) জারি করে, যা পরবর্তীতে সংশোধন করা হয়। তবে অভিযোগ ওঠে যে, এতে সাংবিধানিক পদধারীদের এবং সংবিধান স্বীকৃত অন্যান্য পদকে প্রশাসন ক্যাডারের নিচে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট করেন।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ওই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সকে বাতিল ঘোষণা করে এবং আট দফা নির্দেশনা দেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। পরে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দিয়ে কিছু সংশোধনসহ তিনটি মূল নির্দেশনা দেয়।
মূল নির্দেশনাগুলো হলো—
১. সংবিধান সর্বোচ্চ আইন হওয়ায়, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে সাংবিধানিক পদধারীরাই অগ্রাধিকার পাবেন।
২. জেলা ও সমমানের জজগণ সচিবদের সমান পদমর্যাদায় (১৬ নম্বর স্থানে) থাকবেন।
৩. অতিরিক্ত সচিবরা জেলা জজদের পরবর্তী ক্রমিকে (১৭ নম্বর স্থানে) অবস্থান করবেন।
পরে এই রায়ের বিরোধিতা করে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন রিভিউ আবেদন করে। তাদের আবেদনে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলেরাও যুক্ত হন।