গত বছরের ১৯ জুলাই সিলেটে গণ–অভ্যুত্থানের সময় স্থানীয় দৈনিক একাত্তরের কথা পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. মোহিদ হোসেন হাত তুলে অনুরোধ করেছিলেন, ‘দস্তগীর ভাই, আমরা সাংবাদিক, আমাদের দিকে গুলি কইরেন না।’ কিন্তু তবুও পুলিশ গুলি চালায়। সেই গুলিতেই প্রাণ হারান সাংবাদিক এ টি এম তুরাব।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য তুলে ধরেন মোহিদ হোসেন। তিনি মামলায় ৩০তম সাক্ষী হিসেবে হাজির হন। মামলাটি দায়ের করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে।
জবানবন্দিতে মোহিদ হোসেন বলেন, সেদিন সারা দেশে বিএনপির উদ্যোগে গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি ছিল। সিলেটের মধুবন পয়েন্ট সংলগ্ন কালেক্টরেট জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে যান। জানাজা শেষে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের হলে পুলিশ পেছন দিক থেকে আকস্মিক গুলিবর্ষণ শুরু করে।
মোহিদ জানান, তিনি ও তার সহকর্মী তুরাব পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন পুলিশ সাংবাদিকদের লক্ষ্য করেই গুলি ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে দৈনিক জালালাবাদ ও নয়াদিগন্ত পত্রিকার ফটোসাংবাদিক আবু তোরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে মোহিদ তাকে রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশায় করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ–সমর্থকদের বাধার কারণে তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুরাব মারা যান।
মোহিদের অভিযোগ, সাবেক এডিসি গোলাম সাদেক দস্তগীর, কোতোয়ালি থানার সাবেক এসি মিজানুর রহমান ও সাবেক ওসি মহিউদ্দিনসহ আরও অনেকে সেদিন গুলি চালান।