চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন আরও একদিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি বহাল রেখেছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট বাজার থেকে পূর্বদিকে রেলগেট পর্যন্ত এলাকাজুড়ে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করায় পূর্বের নির্দেশনা আরও ২৪ ঘণ্টার জন্য বাড়ানো হয়েছে। ফলে আগামী মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত এই এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির সমবেত হওয়া, সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা দেশীয় অস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
এর আগে শনিবার দিবাগত রাত থেকে রবিবার বিকেল পর্যন্ত টানা সংঘর্ষে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়। চবি মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. ফারহানা ইয়াসমিন জানান, আহতদের মধ্যে ৫০০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, আর গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। বেশিরভাগের মাথা, কপাল ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কাটা-ছেঁড়া ও গভীর ক্ষত রয়েছে।
রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয়দের দিক থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
শিক্ষার্থীদের হাতে রড, লাঠি ও পাথর ছিল, অন্যদিকে স্থানীয়রা রামদা ও লোহার রড নিয়ে হামলায় অংশ নেয়। সংঘর্ষ দ্রুত গ্রামাঞ্চলের অলিগলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয় এবং অনেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর দুইটার দিকে হাটহাজারী প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত তিন শিক্ষার্থী এখনও নগরের দুই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে একজনকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।