Monday, September 1, 2025
spot_imgspot_img
Homeরাজনীতিদুঃসময়েও নেতাকর্মীদের একত্রিত রেখেছেন তারেক রহমান

দুঃসময়েও নেতাকর্মীদের একত্রিত রেখেছেন তারেক রহমান

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে তারেক রহমান নেতৃত্বের দায়িত্ব নেন। সেই সময় তার লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা এবং মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি বিএনপি এবং দেশকে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে নেয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বর্তমানে বিএনপির মূল লক্ষ্য আগামী জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন, সরকার গঠন এবং গণঅভ্যুত্থানের পরিকল্পনা সবকিছুই তারেক রহমানকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর দলের নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছেন। প্রত্যাশা, তিনি নির্বাচনে মাঠের নেতৃত্ব দেবেন। এ দিন সোমবার দলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হবে।

জাতীয় নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরতে পারেন তারেক রহমান। নির্বাচনের রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল ঘোষণা হবে। ওয়ান-ইলেভেন সরকার এবং পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ৮২টি মামলা হয়েছিল, যার মধ্যে পাঁচটি মামলায় তিনি দণ্ডিত হন। পরে গণঅভ্যুত্থানের পর আইনি প্রক্রিয়ায় তিনি সব মামলা থেকে মুক্ত হন।

তারেক রহমান ২০০৭ সালে গ্রেপ্তার হন এবং পরের বছর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। ২০১৮ সালে খালেদা জিয়ার কারাবন্দি হওয়ার পর দলের প্রয়োজনে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। লন্ডন থেকে তিনি স্থায়ী কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে দল পরিচালনা করে যাচ্ছেন।

তার নেতৃত্বে দেশে দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হলেও ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। দল মনে করে, নির্বাচন প্রহসনের ছিল, প্রার্থীদের ওপর হামলা-নির্যাতন হয়েছে এবং প্রশাসন সরকারি দলের পক্ষ নিয়েছে।

তারেক রহমান দলের সংগঠনকে পুনরায় সাজানোর কাজ শুরু করেন। তিনি জনগণকে সংগঠিত করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নামেন। দীর্ঘ সময় নেতাকর্মীরা জেল-জুলুম, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও গ্রেপ্তারের মধ্যে থেকেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অটল থাকে। দলের ভাঙন রোধে তারেক রহমান নেতাকর্মীদের একত্রিত রেখে দলকে সুসংহত রাখেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে দলের কৌশলও তিনি নির্ধারণ করেন। দলকে মাঠে নেতৃত্বে না রেখে শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের মাধ্যমে অভ্যুত্থান সম্পন্ন হয়। তারেক রহমান শৃঙ্খলা রক্ষা এবং দলের ইমেজ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তার নির্দেশে চার হাজারের বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় এবং অনেকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়।

তিনি মনে করেন, আগামী নির্বাচন কঠিন হবে। তাই জনগণের পাশে থেকে ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন জয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। বিএনপির ৩১ দফার প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দেন এবং নেতারা তা বাস্তবায়ন করছেন। সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে নির্বাচন সুষ্ঠু করার পরিকল্পনা করছেন। এছাড়া, নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করে জনগণের ভাগ্য ও জীবনমান উন্নয়নের পথও ঠিক করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র সংকটের সময় জিয়া পরিবার—বাবা, মা, ছেলে—প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানেও তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র উত্তরণের প্রচেষ্টা চলছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments