বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম ও তার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। রোহিঙ্গাদের সহায়তার নামে এনজিও গড়ে বিদেশি অনুদান লুটপাট করার পাশাপাশি ঘুষ ও দুর্নীতির টাকাও আত্মসাৎ করে আত্মীয়দের নামে বৈধ করার চেষ্টা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মনিরুল ইসলামের স্ত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা, শ্যালক রেজাউল আলম শাহীন, শ্যালকের স্ত্রী সানজিদা খানম টুম্পা ও অন্যান্য ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা এই সিন্ডিকেটের অংশ ছিলেন। দুদক ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে গত এক দশকে মনিরুল ইসলামের সম্পদের নাটকীয় বিস্তার ও দুর্নীতির চিত্র উন্মোচিত হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম, তার স্ত্রী ও আত্মীয়দের নামে পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক হিসাবে এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ ও শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনালের অনুদানের নামে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এসব টাকার বড় অংশ এস এস এন্টারপ্রাইজ, তানভীর ডেইরি ফার্মসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা হয়েছে।
প্রমাণ মিলেছে— মনিরুল ইসলামের নামে আটটি ব্যাংক হিসাব, স্ত্রীর নামে ডজনখানেক সম্পদ, শ্যালকের নামে কোটি কোটি টাকার লেনদেন এবং টুম্পা ও তার ভাই দেলোয়ারের হিসাবে অস্বাভাবিক টাকা জমা ও উত্তোলনের। অভিযোগ রয়েছে, রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরায় সায়লা ফারজানা ও রেজাউল শাহীনের নামে ৫০টির বেশি ফ্ল্যাট রয়েছে।
শুধু তাই নয়, এনজিওগুলোর হিসাবে শত শত কোটি টাকা ঢুকে বিভিন্ন সময়ে ভুয়া প্রতিষ্ঠান, ঠিকাদারি ফার্ম ও আত্মীয়স্বজনের হিসাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কেএসআর ও শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে একাধিকবার শত কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যার বেশিরভাগই ‘লুটপাট’ হয়েছে বলে দুদক মনে করছে।
তবে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, অনুসন্ধান চলমান থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। সব তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের পর কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।