দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পরিচালিত হয়েছে ব্যাপক অভিবাসনবিরোধী অভিযান। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের পর্যটনকেন্দ্র বুকিত বিনতাং এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে ৭৭০ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষ।
বুধবার নিউ স্ট্রেইট টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, আটক হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে সর্বাধিক ৩৯৬ জন বাংলাদেশি (৩৯৪ পুরুষ ও ২ নারী)। এছাড়া মিয়ানমারের ২৩৫ জন, নেপালের ৭২ জন, ভারতের ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১৯ জন এবং আরও ৯ জন বিভিন্ন দেশের নাগরিক রয়েছেন।
রাতের অভিযানে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অভিবাসীরা টেবিলের নিচে, দোকানের ভেতরে কিংবা ছাদে লুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েন। “অপ্স বেলাঞ্জা” নামে পরিচিত এ অভিযানে বুকিত বিনতাংকে মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে লকডাউন জোনে পরিণত করা হয়। পর্যটকে ভরা রাস্তা ঘিরে ফেলে সব প্রবেশ ও প্রস্থানপথ বন্ধ করে কর্মকর্তারা কাগজপত্র পরীক্ষা চালান এবং লুকানো অভিবাসীদের বের করে আনেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ অভিযানে পুত্রজায়া থেকে আসা অভিবাসন দপ্তরের ১০৬ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। নেতৃত্ব দেন বিভাগের মহাপরিচালক বাসরি ওসমান। তিনি জানান, অভিযানে মোট ২ হাজার ৪৪৫ জনকে তল্লাশি করা হয়, এর মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জন বিদেশি।
অনিবন্ধিত অভিবাসীদের আটক হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বাসরি জানান— মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা, বৈধ পরিচয়পত্র না থাকা এবং অনুমতি ছাড়া কাজ করা। সাধারণত দারিদ্র্য ও বেকারত্ব থেকে মুক্তি পেতে এসব শ্রমিকরা মালয়েশিয়ায় নির্মাণকাজ, বাগান বা ঝুঁকিপূর্ণ খাতে কাজ করতে আসেন, যা স্থানীয়রা করতে চান না।
তিনি আরও বলেন, বুকিত বিনতাং দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসীদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান, কারণ এটি শহরের কেন্দ্র এবং নাইটলাইফ হটস্পট। তিন সপ্তাহ পর্যবেক্ষণের পর এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি গোপন জুয়ার আসরও পাওয়া গেছে, যেখানে বিদেশিরা অনলাইন জুয়ায় অংশ নিচ্ছিলেন।
আটককৃতদের প্রথমে প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য পুত্রজায়া অভিবাসন দপ্তরে নেওয়া হবে, এরপর তাদের আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে। বাসরি জানান, এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও নজরদারি বাড়ানো হবে, যাতে অনুমোদিত কোটার বাইরে বিদেশি কর্মী নিয়োগ দেওয়া না হয়।