Wednesday, September 3, 2025
spot_imgspot_img
Homeদেশের খবরনাটোরে ৩০ কেজি গাঁজাসহ আটক চালক, মামলা দেখানো হলো মাত্র ৭ কেজা...

নাটোরে ৩০ কেজি গাঁজাসহ আটক চালক, মামলা দেখানো হলো মাত্র ৭ কেজা গাঁজার ভিত্তিতে – স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ

নাটোরের বড়াইগ্রামে ৩০ কেজি গাঁজাসহ সায়েম (৩৪) নামে এক কাভার্ডভ্যান চালককে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উদ্ধারকৃত গাঁজার পরিমাণ প্রায় ৩০ কেজি হলেও, থানায় মাত্র ৭ কেজা গাঁজা দেখিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযানে অংশ নেওয়া এসআই আব্দুর রাজ্জাককে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে বারোটার দিকে ছাতিয়ানগাছা মোল্লাপাড়া মোড়ে একটি নীল রঙের কাভার্ডভ্যান থামিয়ে গাড়ি থেকে একটি বস্তা নামানো হয়। এলাকায় তখন অনেকে উপস্থিত ছিলেন এবং বস্তা দেখে সন্দেহ করায় ধাওয়া শুরু করেন। ধাওয়ার সময় দুই ব্যক্তি পালিয়ে যায়, কিন্তু চালক গ্রামবাসীর হাতে আটক হন। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে। বনপাড়া তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আব্দুর রাজ্জাক সঙ্গীয় ফোর্সসহ উপস্থিত হয়ে গাড়ি, চালক এবং বস্তায় থাকা গাঁজা জব্দ করে।

স্থানীয়রা আরও জানিয়েছেন, ধাওয়ার সময় আরও দুই ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ায় তারা গ্রামবাসীর হাতে আটক হননি। তবে আটককৃত বস্তায় থাকা ১৩ প্যাকেট ও একটি ব্যাগের মধ্যে গাঁজা বোঝাই ছিল, যার মোট ওজন আনুমানিক ২৮-৩০ কেজি। অভিযানের সময় স্থানীয়রা চাইলে গাঁজার প্রকৃত পরিমাণ দেখাতে, তবে এসআই আব্দুর রাজ্জাক স্থানীয়দের ওপর চড়াও হন। এছাড়া গণমাধ্যম কর্মীদের গাঁজার পরিমাণ দেখার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ ঘটনায় শুধুমাত্র ৭ কেজা গাঁজা জব্দ দেখিয়ে এবং অজ্ঞাত দুইজনসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে এসআই আব্দুর রাজ্জাকের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “গতরাতে কর্তব্যরত অফিসারের হাতে ৭ কেজি গাঁজা এবং একটি কাভার্ডভ্যান এসেছে, সেই অনুযায়ী মামলা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের কাছে যে পরিমাণ গাঁজা দেখানো হয়েছিল, তার সঙ্গে থানায় দায়েরকৃত পরিমাণের মিল নেই।”

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২৯ আগস্ট উপজেলার রাজাপুর থেকে ৫ কেজি গাঁজাসহ একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। কিন্তু থানায় পৌঁছানোর পূর্বে তা ৫০ গ্রাম হয়ে যায়। এ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে গভীর ক্ষোভ এবং পুলিশের ওপর অবিশ্বাস তৈরি করেছে।

স্থানীয় সুশীল সমাজের সদস্যরা বলছেন, “প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী পুরো ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে মামলা করা হলো মাত্র ৭ কেজা জব্দ দেখিয়ে। এটি পুলিশের স্বচ্ছতার বিষয়ে প্রশ্ন তোলে। আমরা চাই, বাস্তব তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এই ঘটনায় নাটোরের বড়াইগ্রামে সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয় সুশীল সমাজের মধ্যে পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা আশা করছেন, কর্তৃপক্ষ প্রকৃত ঘটনা অনুসারে তদন্ত করবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments