Thursday, September 4, 2025
spot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকএসসিও সম্মেলনে ভারত-চীনের ঘনিষ্ঠতা: পাকিস্তানের প্রতি পাঠানো কৌশলগত বার্তা

এসসিও সম্মেলনে ভারত-চীনের ঘনিষ্ঠতা: পাকিস্তানের প্রতি পাঠানো কৌশলগত বার্তা

চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নেতারা অংশ নেন, যার মধ্যে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

চীন সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বৈঠক করেন। তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ে মোদি দুই দেশের সম্পর্ক এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন।

বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, “বিশ্বের পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। ভারত ও চীন কেবল দুই প্রাচীন সভ্যতা নয়, বিশ্বের দুই জনসংখ্যা প্রাচুর্যপূর্ণ দেশ এবং গ্লোবাল সাউথের অংশ। দুই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো পারস্পরিক বন্ধু হিসেবে থাকা এবং ‘এক দেশ অন্য দেশের সাফল্যে অবদান রাখে এমন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা’।”

মোদিও একই সুরে বলেন, “দুই দেশের সহযোগিতা ২৮০ কোটি মানুষের স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত। ভারত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পাকিস্তানের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। পাকিস্তান চীনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত বন্ধুত্ব বজায় রাখছে। পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব আইজাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, “চীনের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক পাকিস্তানের উপর প্রভাবিত করতে পারবে না। ইসলামাবাদ ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী ও কৌশলগত।”

অর্থনীতিবিদদের মতে, ভারত ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ইতোমধ্যে শক্তিশালী। ভারত পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে, আর চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু, ভিসা শিথিলকরণ এবং বাণিজ্য চুক্তি সম্ভাব্য পদক্ষেপ হতে পারে।

তবে সীমান্ত বিরোধ, ব্রহ্মপুত্র নদ ও বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কসহ কিছু ইস্যু এখনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতার জন্য ভারতের সঙ্গে চীনের সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ।

সামাজিক মাধ্যমে ভারত-চীনের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তুমুল আলোচনা চলছে। মোদি এসসিও সম্মেলনের ফাঁকে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের ছবি শেয়ার করেছেন। শেহবাজও সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তান-চীনের সম্পর্কের দৃঢ়তার ছবি পোস্ট করেছেন।

পাকিস্তানের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক পাকিস্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না। তবে ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং চীনের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্বের অভাব এই অঞ্চলের রাজনৈতিক জটিলতাকে আরও স্পষ্ট করছে।

সংক্ষেপে বলা যায়, এসসিও সম্মেলনে ভারত-চীনের ঘনিষ্ঠতা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য কৌশলগত বার্তা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে, তবে পাকিস্তান-চীনের দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্বে কোনো পরিবর্তন আনবে না।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments