গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শেষ করার স্বার্থে একটি নিরপেক্ষ টেকনোক্র্যাটভিত্তিক প্রশাসন গঠনের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। বুধবার হামাসের হাই কমান্ড এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গত ১৮ আগস্ট মধ্যস্থতাকারীরা গাজা পরিচালনার জন্য নিরপেক্ষ ও টেকনোক্র্যাটভিত্তিক প্রশাসন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। হামাসের হাইকমান্ড সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। এখন আমরা ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষা করছি।”
হামাস জানিয়েছে, তারা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে, তবে বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনিদেরও মুক্তি দিতে হবে। মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা আলোচনা করে নির্ধারণ করা হবে।
নিরপেক্ষ প্রশাসন গঠনের উদ্দেশ্য মূলত যুদ্ধবিরতি। নতুন প্রশাসনিক কাঠামো গাজার যাবতীয় বিষয় পরিচালনা করবে। হামাসের দাবিগুলো হলো— গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করা, দখলদার শক্তির সেনাদের প্রত্যাহার, খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহের জন্য সীমান্ত ক্রসিং খোলা এবং গাজায় পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা।
তবে হামাসের প্রস্তাবের কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর এই প্রস্তাবকে ‘কথার মারপ্যাঁচ’ হিসেবে উল্লেখ করে। তারা জানিয়েছে, যুদ্ধ থামতে হলে অবিলম্বে সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে, হামাসকে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে, গাজাকে অসামরিকীকরণ করতে হবে এবং সেখানে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে যা সন্ত্রাসবাদে উসকানি দেবে না।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে আনে। এরপরই ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরু করে, যা এখনও চলমান। এই অভিযান ও দুই বছরের গোলাবর্ষণে গাজায় ৬৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও অর্ধ লক্ষাধিক আহত হয়েছেন। পাশাপাশি খাদ্য, ওষুধ ও ত্রাণ সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় গাজায় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস যোদ্ধাদের ধরা জিম্মিদের মধ্যে এখনও অন্তত ২০ জন জীবিত রয়েছে।