দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি কমে যাওয়া ও বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন এই ভ্যাপসা গরম কমার সম্ভাবনা নেই, বরং মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে, যা গরমের মাত্রা আরও বাড়াবে।
আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানান, তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি না হলেও বাতাসে জলীয়বাষ্প বেশি থাকায় অস্বস্তিকর গরম অনুভূত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ৪-৫ দিন রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রামে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। ফলে তাপপ্রবাহ চলমান থাকবে এবং গরম আরও তীব্র হবে।
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৮০ শতাংশেরও বেশি ছিল। এতে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি থাকলেও গরম অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই গরমে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হচ্ছে। খেটে খাওয়া মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে।
কেরানিগঞ্জের রিকশাচালক আলী ইমাম বলেন, “দিনে প্রচণ্ড রোদে বেশিক্ষণ রিকশা চালানো যায় না, আবার রাতে গরমের কারণে ঘুমানোও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।”
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট মাসে দেশের চার বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হলেও বাকি চার বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সার্বিকভাবে আগস্ট মাসে বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে মাত্র ১ শতাংশ বেশি ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হলেও আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এ মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কম বৃষ্টিও হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে দুই থেকে তিনটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে, এর মধ্যে একটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। একইসঙ্গে এক থেকে দুটি মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টির কারণে দেশের উত্তর, উত্তর–পূর্ব ও দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে।
গত মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সীতাকুণ্ডে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বুধবার সিলেটে ৩৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টি হয়নি, শুধু নিকলিতে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।