ময়মনসিংহ শহরের দেয়ালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের চেতনাপূর্ণ ফ্যাসিবাদবিরোধী, দুর্নীতিবিরোধী এবং রাষ্ট্র সংস্কারধর্মী গ্রাফিতি মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের সীমানা প্রাচীরে আঁকা জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে সাদা রঙে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এই কাজটি পেয়েছে আওয়ামীপন্থী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস এম.এস. এন্টারপ্রাইজ। স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন—এটি কি ইতিহাস মুছে ফেলার প্রক্রিয়া?
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিপ্লবী গ্রাফিতি আঁকেন। এক বছরের মাথায় তা মুছে ফেলার ঘটনায় শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আন্দোলনের নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘আগেও জেলা প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি মুছে ফেলেছিল এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পুনরায় তা করা হবে না। কিন্তু এবার নিজের বাসভবনের দেয়াল থেকেই ইতিহাস মুছে ফেলা হলো।’
স্থানীয়রা জানান, দেয়াল উঁচু করা, রঙ করা এবং কাঁটাতার বসানোর জন্য ১৮ লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে মের্সাস এম.এস. এন্টারপ্রাইজ। তবে নতুন দেয়ালে পুনরায় গ্রাফিতি আঁকা হবে কি না, সে বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
বিএনপি, জামায়াত ও নাগরিক আন্দোলনের নেতারা মন্তব্য করেছেন, শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতি রক্তাক্ত জুলাই–আগস্টের চেতনার প্রতীক। সেটি মুছে ফেলা মানে আন্দোলনের স্মৃতি মুছে ফেলা।
জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। এনডিসি সাইফুল্লাহিল গালিব জানিয়েছেন, দেয়াল সংস্কারের জন্য গ্রাফিতি মুছে দেওয়া হয়েছে এবং পরে নতুন করে আঁকা হবে। তবে নগরবাসীর প্রশ্ন—একবার ইতিহাস মুছে ফেলার পর পুনরায় তা আঁকা হলে কি সত্যিই স্মৃতি সংরক্ষণ সম্ভব?