শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সিংগাবরুণা গ্রামের হতদরিদ্র জাকির হোসেন গাভি বিক্রি করে কিস্তিতে কিনেছিলেন একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান, যা তার জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ আদায় করতে গিয়ে কর্ণঝোড়া বাজার থেকে তার ভ্যানটি চুরি হয়ে যায়। ঘটনার পর জাকির কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং এখনও সেই দুঃখ কমেনি।
জাকির হোসেনের পাঁচ সদস্যের পরিবার আছে। তার একটি মেয়ে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে, কিন্তু টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। বড় ছেলে ঢাকায় বিয়ে করে বসবাস করছেন, ছোট ছেলে স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ছে। জাকিরের জমিজমা খুবই সীমিত, যা তিনি পরিবারের জন্য ব্যবহার করেন।
সাত মাস আগে শ্রীবরদীর কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের একটি দোকান থেকে ৯৬ হাজার টাকায় ভ্যানটি কিনে জাকির ৪০ হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করেন, বাকি টাকা কিস্তিতে দিতে থাকেন। ভ্যানটি হারিয়ে তার সংসারের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম শেষ হয়ে গেছে।
জাকির হোসেন বলেন, “বাজারে যাত্রী নামিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম। নামাজ শেষে ফিরে এসে দেখি ভ্যান নেই। কিস্তি কীভাবে দেব, সংসার চালাবো কীভাবে—কিছুই বুঝতে পারছি না।”
ঘটনার রাতে ভ্যান চুরির খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কর্ণঝোড়া জামে মসজিদ কমিটির সদস্য জিয়া জানান, চোর চক্র ভ্যান উদ্ধারের জন্য ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। পরে ফোনে ভ্যানের অবস্থান জানা গেলেও তাদের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার জাহিদ জানান, বিষয়টি জানার পর রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল এবং অনুসন্ধান চলমান। শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের আহমেদ জাকির হোসেনকে সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।