প্রবাসী আয় ও রপ্তানি প্রবাহ বৃদ্ধির কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে গেছে। এর ফলে মুদ্রার দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনে মূল্য স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) পাঁচটি ব্যাংক থেকে ১৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্রয় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মাল্টিপল প্রাইস অকশন (এমপিএ) পদ্ধতিতে প্রতি ডলারের এক্সচেঞ্জ রেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা। একই রেটে অকশনের কাট-অফও ঠিক করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছর ২০২৫-২৬ সালে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১.১৩ বিলিয়ন ডলার (১১৩ কোটি মার্কিন ডলার) কিনেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি ডলারের চাহিদা কমে আসায় মূল্য কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারক এবং প্রবাসীরা অনুৎসাহী হতে পারেন। তাই এই ক্রয় মূলত বাজারে ডলারের দাম একটি নির্দিষ্ট সীমার নিচে নামতে না দেওয়ার লক্ষ্য রক্ষা করছে।
গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজার থেকে ডলার কেনা-বেচা করছে। এর আগে বড় অঙ্কের ডলার বিক্রি হলেও চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ধাপে ধাপে ক্রয়ের মাধ্যমে রিজার্ভকে শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আজকের কেনাকাটার ফলে রিজার্ভ কিছুটা মজবুত হওয়ার আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমপিএ পদ্ধতিতে ডলার লেনদেন স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্য নির্ধারণে সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা আনতে আমদানি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি রপ্তানি ও প্রবাসী প্রেরিত অর্থ প্রবাহ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। রিজার্ভের চাপ ও বৈদেশিক লেনদেন ঘাটতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিটি পদক্ষেপ বাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে, যা আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে।