মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় বিষাক্ত মদপানের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ জনে। এ ঘটনায় আরও অন্তত দুইজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হঠাৎ মৃত্যুর এ ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রহমতুল্লাহ বেপারী (৬৫)। তিনি হেলাল উদ্দিন বেপারীর ছেলে এবং টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কাঠদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে স্বজন ও স্থানীয়দের মধ্যে শোকের মাতম শুরু হয়। জানা গেছে, পরিবারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দাফনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে শুক্রবারের মধ্যে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার কাঠাদিয়া-শিমুলিয়া ইউনিয়নের কাঠাদিয়া গ্রামে একের পর এক চারজনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন— কাঠাদিয়া গ্রামের বাচ্চু বেপারী (৬৫), ইব্রাহিম মুন্সী (৭০), রহমত উল্লাহ বেপারী (৬৮) এবং মহাকালি ইউনিয়নের ঘাসিপুকুরপাড় এলাকার হোসেন ডাক্তার (৬৫)। প্রত্যেকেই স্থানীয়ভাবে তৈরি বিষাক্ত মদ পান করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এ বিষয়ে টঙ্গীবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম জানান, বিষাক্ত মদপানের কারণে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বাসিন্দা এবং বাকি দুইজন সদর উপজেলার মানুষ। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে অভিযানে নেমেছে।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামে অবৈধভাবে তৈরি দেশি মদ বহুদিন ধরে বিক্রি হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কয়েকজন একসঙ্গে মদ পান করলে তারা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে একে একে তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি এলাকায় চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এখনো কেউ কেউ গোপনে ওই মদ পান করে থাকলে তাদেরও জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
এদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। তারা ধারণা করছেন, মদের সঙ্গে ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রণ থাকার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে মদ বিক্রি ও উৎপাদন বন্ধে বিশেষ অভিযান চালানোর আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
মুন্সীগঞ্জ জুড়ে এই ঘটনায় শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। নিহতদের পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত অবৈধ মদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।